মিয়ানমারে বৌদ্ধ উৎসবে প্যারাগ্লাইডার থেকে বোমা হামলায় নিহত ২৪

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৩৯ পিএম
মিয়ানমারে বৌদ্ধ উৎসবে প্যারাগ্লাইডার থেকে বোমা হামলায় নিহত ২৪
ছবি : সংগৃহীত

মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি উৎসবে বোমা হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৪৭ জন। উৎসব চলাকালীন প্যারাগ্লাইডার থেকে দুটি বোমা ফেলা হয় বলে জানান নির্বাসিত ন্যাশনাল ইউনিটি সরকারের এক মুখপাত্র। খবর বিবিসি, আল জাজিরা। 

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সাগাইং অঞ্চলে সামরিক বাহিনীর প্যারাগ্লাইডার হামলায় অন্তত ২০ জনের বেশি নিহত হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার রাতে দুদফায় এই হামলা চালানো হয়। সেখানকার স্থানীয় লোকজন বৌদ্ধ উৎসব উপলক্ষে প্রদীপ প্রজ্বলন ও রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির দাবিতে সমবেত হয়েছিলেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মিয়ানমার বিষয়ক গবেষক জো ফ্রিম্যান বলেন, ২০২১ সালের সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে চলমান সহিংসতার এটাই সর্বশেষ উদাহরণ। তথাকথিত নির্বাচনের আগে সেনাবাহিনী তাদের ক্ষমতা পোক্ত করতে আরও নির্মম অভিযান শুরু করেছে।

থাইল্যান্ডভিত্তিক স্বাধীন সংবাদমাধ্যম দ্য ইররাওয়াডি জানিয়েছে, চাউং-উ এলাকায় স্থানীয় সময় রাত ৮টা এবং ১১টার দিকে দুই দফা আক্রমণে ২০ থেকে ৩২ জন নিহত হন এবং আরও বহু মানুষ আহত হন। জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়ের তথ্যমতে, মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডার ব্যবহার করে বেসামরিক এলাকায় গোলাবর্ষণ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পরিচিত কৌশল।

২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমার ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে নিমজ্জিত। সেনা নেতৃত্বাধীন সরকার, জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী ও বিরোধী সংগঠনের মধ্যে সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৭৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত এবং ৩০ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে সেনাবাহিনী দেশটির মাত্র ২০ শতাংশ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, বাকি অংশ সশস্ত্র গোষ্ঠী বা বিভিন্ন শক্তির মধ্যে বিভক্ত। জুলাইয়ে সামরিক সরকার জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে বছরের শেষে নির্বাচন ঘোষণার পরও জাপানসহ অনেক দেশ বলছে, শান্তি প্রক্রিয়া ছাড়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়।

অ্যামনেস্টির ফ্রিম্যান আন্তর্জাতিক সংস্থা আসিয়ান ও জাতিসংঘকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসিয়ানকে তাদের ব্যর্থ নীতিমালা পর্যালোচনা করে জান্তার ওপর চাপ বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকেও মিয়ানমারের পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে প্রেরণ করার আহ্বান জানানো হয়।