ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্টকে গৃহবন্দী করার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের, যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা


ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোকে গৃহবন্দী করার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারক। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় বিচারক এই আদেশ দেন। খবর বিবিসির।
আদালতের এই আদেশের ফলে সামরিক অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হওয়া সাবেক ডানপন্থি এই রাজনীতিক ও আদালতের মধ্যকার টানাপোড়েন আরও বাড়ল। সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলসোনারো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মিত্র। ২০২২ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার কাছে হেরেও ক্ষমতা ধরে রাখার ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে এখন বিচার চলছে।
ব্রাজিলের সাবেক এই প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আদালতের রায়ের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে জানায়, তারা এই আদেশের নিন্দা জানিয়েছে এবং যারা এই নিষিদ্ধ কার্যক্রমে সহায়তা ও উৎসাহ দিচ্ছে, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।
গত মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্প বলসোনারোর প্রতি সমর্থন প্রকাশ করে বলেন, তিনি কোনো অপরাধ করেননি। ট্রাম্প এই বিচারকে উইচ-হান্ট বা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে অভিহিত করেছেন।
এর আগে জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়ে বিচারকাজ বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ ওঠায় গতিবিধি নজরদারিতে রাখতে গত মাসে বলসোনারোকে (৭০) পায়ে ইলেকট্রিক কড়া পরানোর নির্দেশ দেন আদালত। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে তার ছেলেরা ও মিত্ররা বলসোনারোর জ্বালাময়ী ভাষণগুলো অনলাইনে দিয়েছিল। জনগণের উদ্দেশে দেওয়া এ ধরনের ভাষণ অনলাইনে প্রচার তৃতীয় পক্ষের ওপরও নিষিদ্ধ করা হয়।
গত রোববার বলসোনারোর প্রতি সংহতি জানিয়ে ব্রাজিলের কয়েকটি শহরে সমাবেশ হয়। এর মধ্যে রিওডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ছেলের সঙ্গে তার সরাসরি ফোনালাপ সম্প্রচার করে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেন বলসোনারোর মিত্ররা।
এ ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারক আলেক্সান্দ্রে ডি মোরায়েস ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। সোমবার তিনি বলেন, বিচার বিভাগ একজন আসামিকে তার ‘রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার’ কারণে এই বিভাগকে বোকা ভাবার সুযোগ দেবে না।
আদালতের বিধিনিষেধ বারবার অমান্য করায় বলসোনারোর সমালোচনা করে তাকে রাজধানী ব্রাসিলিয়ার বাড়িতে গৃহবন্দী রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। একইসঙ্গে দেশটির সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে তার আইনজীবী ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে দেখা করতে এবং মুঠোফোন ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন তিনি।