দুই শিক্ষকের হাতাহাতির ভিডিও ভাইরাল
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের চান্দপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই সহকারী শিক্ষকের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তবে ঘটনার সূত্রপাত ঘটে এর কয়েক দিন আগে, গত ৮ ডিসেম্বর দুপুরে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে।
৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, এক শিক্ষক অপর শিক্ষককে চেয়ারের সঙ্গে চেপে ধরে রেখেছেন। এ সময় উপস্থিত এক নারী শিক্ষক আতঙ্কিত কণ্ঠে বলতে শোনা যায়, ‘আল্লাহ রহম করো, আল্লাহ রহম করো। মারামারি করার কী দরকার?’
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চান্দপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহমুদুল হাসান জুনায়েদ ও সহকারী শিক্ষক মো. মহিউদ্দিনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা চলছিল। ঘটনার দিন দুপুরে অফিস কক্ষে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়।
অভিযোগ রয়েছে, উত্তেজনার এক পর্যায়ে সহকারী শিক্ষক মাহমুদুল হাসান জুনায়েদ অফিসে থাকা একটি ধারালো বঁটি নিয়ে মো. মহিউদ্দিনের ওপর হামলার চেষ্টা করেন। এ সময় উপস্থিত সহকারী শিক্ষিকা ঝর্না আক্তার দ্রুত এগিয়ে এসে বঁটিটি কেড়ে নেন।
এরপরও পরিস্থিতি শান্ত না হয়ে দুজনের মধ্যে পুনরায় ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে জুনায়েদ তার সহকর্মীকে ধাক্কা দিয়ে চেয়ারে ফেলে গলা চেপে ধরেন। পরে অন্য শিক্ষক ও স্থানীয়রা এগিয়ে এলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক মাহমুদুল হাসান জুনায়েদ বলেন, ভাইরাল ভিডিওটি ঘটনার শেষ অংশ। এর আগে আমাকে দুবার ধাক্কা দিয়ে চেয়ারে ফেলে দেওয়া হয় এবং শার্টের কলার ধরা হয়। আমি আত্মরক্ষার জন্য তাকে ধাক্কা দিই। বঁটি দিয়ে হামলার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
অন্যদিকে সহকারী শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন বলেন, জুনায়েদ সাহেব প্রায়ই জোরজবরদস্তি করেন। কথা না শুনলেই তিনি ক্ষিপ্ত হন। ঘটনার দিন তিনি আমাকে হুমকি দেন। প্রতিবাদ করলে তিনি অফিসে থাকা দা দিয়ে আমাকে মারতে তেড়ে আসেন। পরে ঝর্না ম্যাডাম বঁটি-দা কেড়ে নেন। এরপর তিনি আমাকে চেয়ারে ফেলে গলা চেপে ধরেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সহকারী শিক্ষিকা ঝর্না আক্তার বলেন, ‘অফিস কক্ষে কাজ করার সময় দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। পরে তা ঝগড়া ও হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এক পর্যায়ে জুনায়েদ স্যার বঁটি-দা হাতে নিলে আমি তা কেড়ে নিই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাইলী আক্তার জানান, ঘটনার দিনই বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসকে জানানো হয়। এরপর সহকারী শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হালিমা পারভীন বলেন, ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয়ে কর্মকর্তা পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা জেলা শিক্ষা অফিস গ্রহণ করবে।
বিপি/ এএস