ফেনীতে এখনো পানিবন্দি ৭ হাজার পরিবার

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৪ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৯ পিএম
ফেনীতে এখনো পানিবন্দি ৭ হাজার পরিবার
ছবি : সংগৃহীত

অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট দুর্যোগ পরিস্থিতিতে ফেনীতে বর্তমানে পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা ৬ হাজার ৯৫০টি এবং ৫টি উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা আনুমানিক ২৯ হাজার ৭০০ জন।

সোমবার (১৪ জুলাই) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় কেন্দ্রের (এনডিআরসিসি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। 

প্রতিবেদনে জানানো হয়, অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনী জেলার মুহুরী, কুহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় পরশুরাম উপজেলার ১৯টি এবং ফুলগাজী উপজেলার ১৭টিসহ মোট ৩৬টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে ১৩৭টি (পরশুরাম ৪৪টি, ফুলগাজী ৬৭টি, ছাগলনাইয়া ১৫টি, ফেনী সদর ৯টি এবং দাগনভূঞা ২টি) গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। বর্তমানে ১৩০টি গ্রাম থেকে পানি নেমে গেছে। জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে।

জেলার সব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা ৬ হাজার ৯৫০টি এবং ৫টি উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা আনুমানিক ২৯ হাজার ৭০০ জন। আশ্রয় গ্রহণকারীদের অধিকাংশ লোক আশ্রয়কেন্দ্র ত্যাগ করেছে। বর্তমানে ৩টি উপজেলায় ৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে (পরশুরামে ১টি, ফুলগাজী ৪টি ও দাগনভূঁঞা ১টি) ৮৮টি পরিবারের ৩৬৫ জন লোক অবস্থান করছে।

গত ৮ জুলাই সন্ধ্যা ৭টায় এবং ১১ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং সচিবের উপস্থিতিতে ফেনী জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলেও এতে জানানো হয়েছে।

ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া, সোনাগাজী, দাগনভুঞা ও ফেনী সদর উপজেলায় ত্রাণ কার্য (নগদ) খাতে ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ১৬০ টন ত্রাণ কার্য (চাল) উপ-বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় ২ হাজার ২০০ প্যাকেট শুকনা ও অন্যান্য খাবার উপ-বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, ফুলগাজী, পরশুরাম, ফেনী সদর, ছাগলনাইয়া ও দাগনভূঞা উপজেলায় যথাক্রমে ৯৯টি, ৩৬টি, ২২টি, ১১টি, ৬২টি মোট ২৩০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া, পরশুরাম উপজেলায় এবং অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবক প্রতিনিধিদের লাইফ জ্যাকেট, গামবুট ও রেইনকোট যথাক্রমে ৭২, ১৬ ও ৩৯ পিস দেওয়া হয়েছে। 

এছাড়া ফেনী সদর, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় যথাক্রমে ৩টি, ৩টি ও ৪টি মোট ১০টি ফাইবার বোট সরবরাহ করা হয়েছে, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয়গ্রহণকারীদের রান্না করা খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

জেলা ও উপজেলায় ২ হাজার ৫৪৭ জন দক্ষ স্বেচ্ছাসেবকের মধ্য থেকে পরশুরাম, ফুলগাজী এবং ছাগলনাইয়া উপজেলায় ২৩০ জন স্বেচ্ছাসেবক উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নৌযান নিয়ে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে প্রশাসনকে সহায়তা করছে।