কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ ইস্যুতে দ্বিধাবিভক্ত বৈষম্যবিরোধীরা

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০১ জুলাই ২০২৫, ১১:৫৭ এএম
কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ ইস্যুতে দ্বিধাবিভক্ত বৈষম্যবিরোধীরা

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের পদত্যাগ দাবিকে কেন্দ্র করে খুলনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এ নিয়ে নেতারা প্রকাশ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন। আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অভিযোগও তুলেছেন।

সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে এক পক্ষ সংবাদ সম্মেলনে এ ধরনের আন্দোলনের আর প্রয়োজন নেই বলে ঘোষণা দিয়ে আন্দোলন কেউ করলে তা প্রতিহতের ঘোষণা করেন। বিকেলে অন্য পক্ষ কেএমপি সদর দপ্তর ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে।

জানা গেছে, ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার বিকাল ৪টার দিকে কেএমপির সদর দপ্ত্রের সামনে সড়কে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা রাস্তার দুই পাশ বন্ধ করে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতাকর্মী, ছাত্রদল ও যুবদলের কর্মীরা।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কেএমপি কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দারসহ কয়েকজন কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপেই সুকান্তকে ছেড়ে দেওয়া হয়। খুলনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভীষণ নাজুক হওয়ার পেছনে দায় এবং অপরাধীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলছেন তারা পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে। গত বুধবার শুরু হয় এ আন্দোলন।

বিক্ষোভ চলাকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, “পাঁচ দিন ধরে আমরা রাজপথে আন্দোলন করে যাচ্ছি। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাদের আন্দোলন নয়। এই আন্দোলন খুলনার আপামর জনতার আন্দোলন। খুলনার মানুষ নিরাপত্তাহীনতা থেকে এই আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে। এখানে কোনো ব্যক্তির ডাকে আন্দোলন হয়নি।”

এদিকে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সমমনা ৮টি সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেছেন, জুলাই আন্দোলনের গুটি কয়েক সহযোদ্ধাকে ব্যবহার করে একটি বিশেষ মহল আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করছে। সোমবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন থেকে এ অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “কোনো ব্যক্তিকে টিকিয়ে রাখার জন্য বা নামানোর জন্য আমরা আন্দোলন শুরু করিনি। এসআই সুকান্তকে গ্রেপ্তারের পর আমাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য সফল হওয়ায় আমরা আন্দোলন থেকে সরে আসি। তবে উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, এখনও আমাদের গুটি কয়েক সহযোদ্ধাকে ব্যবহার করে একটি বিশেষ মহল উক্ত আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে যার দায়ভার কোনোভাবেই জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারীরা গ্রহণ করবেন না।”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা মহানগর আহ্বায়ক আল শাহরিয়ার, জেলা কমিটির মুখপাত্র মিরাজুল ইসলাম, জাস্টিস ফর জুলাইয়ের বিভাগীয় প্রতিনিধি সাইফ নেওয়াজ, জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্সের জাহিদুল ইসলাম, আপ বাংলাদেশ-এর ফয়জুল্লাহ ইকবাল, ইনকিলাব মঞ্চ, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশের (পুসাব) প্রতিনিধিসহ আরও অনেকে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা মহানগর আহ্বায়ক আল শাহরিয়ার বলেন, “অভ্যুত্থানে যে অবিচার হয়েছে, আইনি মাধ্যমে তার বিচার হবে। কোনোভাবে মব তৈরি করে, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্পর্ক নেই।”