বাবাকে হত্যা করেছি, ‘আমাকে ধরে নিয়ে যান’: ৯৯৯ নম্বরে কলে মেয়ে


সাভারে বাবাকে হত্যার পর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে আত্মসমর্পণ করেছেন মেয়ে। ফোনে মেয়ে বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে হত্যা করেছি, আমাকে ধরে নিয়ে যান।’
পরে মেয়ের কাছ থেকে লোকেশন পেয়ে সাভার মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় জব্দ করা হয় হত্যার কাজে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরিও।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) ভোরে সাভার পৌর এলাকার মজিদপুরের কাঠাল বাগান মহল্লার আবদুল কাদেরের মালিকানাধীন নূর মোহাম্মদ ভিলার পাঁচতলা ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
নিহত আব্দুর সাত্তার (৫৬) নাটোর জেলার সিংড়া থানার ভগা গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে।
বাড়ির কেয়ারটেকার রহিজ উদ্দিন বলেন, ‘গত পাঁচ মাস আগে বাবা ও মেয়ে ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। তবে তাদের ফ্ল্যাটে কি হয় না হয় আমরা কিছুই জানতাম না।’
সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রশিদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৪টার দিকে ৯৯৯ কল করে এক মেয়ে জানান, বাবাকে হত্যা করেছি আমাকে ধরে নিয়ে যান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ও মেয়ে জান্নাত জাহান শিফাকে গ্রেপ্তার করেন।’
সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইমরান হোসেন বলেন, ‘গত ২০২২ সালে সিংড়া থানার বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছিল মেয়ে জান্নাত। সেই মামলায় বাবা আব্দুর সাত্তার বেশ কয়েক মাস কারাগারে ছিলেন। জামিনে বের হয়ে নিজের ভুল স্বীকার করে মেয়ের সঙ্গে আবার বসবাস শুরু করেন সাভারে। সেই মামলার সূত্র ধরেই বাবার সঙ্গে মেয়ে জান্নাতের বনিবনা হচ্ছিল না। মেয়েকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। অবশেষে বুধবার দিবাগত রাতে ভাতের সঙ্গে ২০টি ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে রাতে বাবাকে খেতে দেয়। পরে তার বাবা ঘুমিয়ে পড়লে ছুরি দিয়ে হত্যা করে। পরে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফ্লাটে বাবা-মেয়ে দুজনে বসবাস করতেন। মেয়ের মায়ের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ছিল না। জান্নাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ও ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুঁড়ি জব্দ করা হয়েছে।’
এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে ও আসামিকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলেও জানান সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক।