ফেনীতে ছাত্রদল নেতার হামলায় সমন্বয়কসহ আহত ৩

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৭ মে ২০২৫, ১২:১১ পিএম
ফেনীতে ছাত্রদল নেতার হামলায় সমন্বয়কসহ আহত ৩

ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নারী প্রতিনিধিসহ দুই সাবেক সমন্বয়কের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ফেনী কলেজের বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) রাতে ফেনী সদর হাসপাতাল মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন— সাবেক সমন্বয়ক আবদুল্লাহ আল মাহফুজ, সাবেক সহ-সমন্বয়ক সালমান হোসেন ও প্রতিনিধি নাদিয়া আক্তার খুশি।

এদের মধ্যে মাহফুজ ফেনী শহরের আরামবাগ এলাকার আবদুল মান্নানের ছেলে ও সালমান সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের বিজয় সিংহ এলাকার বশির আহম্মদের ছেলে এবং নাদিয়া সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের আবুল কালামের মেয়ে।

অভিযুক্ত জিল্লুর জেলা ছাত্রদলের সহ-সম্পাদক ও ফেনী কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য গত ৪ মে তার সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়।

হামলার শিকার মাহফুজ বলেন, ‘আমরা তিনজন ফেনী জেনারেল হাসপাতালে এক রোগীকে দেখতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে বের হলে কলেজের কিছু বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে নাদিয়াকে অকথ্য ভাষায় গালি দিতে শুরু করে জিল্লুর।

তার ভাষ্যে, ‘নাদিয়াকে গালি দিতে নিষেধ করায় তেড়ে আসে জিল্লুর। পরে সহযোগীদের নিয়ে  চাপাতি ও অস্ত্র দিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। আমি এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।’

তিনি বলেন, তখন আমরা শান্তভাবে তাকে গালি দিতে নিষেধ করি। এতে তিনি তেড়ে এসে বলে, তোর এত স্পর্ধা। এরপর জিল্লু ও তার সহযোগীরা চাপাতি ও অস্ত্র দিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। আমি এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।

এ ঘটনার পর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দিন সিফাত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ‘কয়েকদিন আগে হামলাকারী ছাত্রদল নেতা জিল্লুরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির খবর প্রকাশের পর ওই সাংবাদিককে হত্যা হুমকি দিয়েছিল। এরপরও এই অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো তার পক্ষে বিভিন্ন নেতাকে কথা বলতে দেখা গেছে। কি দৈব ক্ষমতা তার।’

সিফাত আরও বলেন, ‘ফেনীর প্রশাসন এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদল এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেয় আমরা দেখতে চাই। পুরোনো সহিংসতার সংস্কৃতি আমরা আর ফিরতে দেব না।’

অবিলম্বে হামলাকারীকে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান সিফাত।

এদিকে, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাউদ্দিন মামুন বলেন, ‘ইতোমধ্যে একটি অভিযোগের ভিত্তিতে জিল্লুরের পদ স্থগিত করা হয়েছে। এবারও যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটে তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এদিকে হামলার প্রতিবাদে ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে মঙ্গলবার রাতে শহরের ট্রাংক রোডে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ফেনী জেলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা।

এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত জিল্লুর রহমানকে একাধিকবার কল করা হলেও তার ব্যবহৃত  মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক ফেনীর সময়ে জিল্লুরের চাঁদাবাজি সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে গত ২৮ এপ্রিল ওই পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদক আরিফ আজমকে তিনি হত্যার হুমকি দেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ৪ মে জিল্লুরের সব সাংগঠনিক পদ স্থগিত করে জেলা ছাত্রদল।