টোল প্লাজায় যুবদল নেতার নেতৃত্বে হামলা, ১৪ লাখ টাকা ছিনতাই


লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নে অবস্থিত তিস্তা সড়ক সেতুর টোল প্লাজায় হামলা চালিয়ে কর্মীদের মারপিট করে ১৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। এতে টোল প্লাজার পাঁচ কর্মী আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। টোল না দেওয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে মাহফুজার রহমান ওরফে রাজু (৪০) নামের স্থানীয় এক যুবদল নেতার নেতৃত্বে প্রায় ৪০ জনের একটি দল এই হামলা চালায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলার প্রধান আসামি মাহফুজার রহমান রাজু লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের মোস্তফি এলাকার বাসিন্দা। তিনি গোকুন্ডা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এজাহারে মোট ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
তিস্তা সড়ক সেতুর টোল আদায়ের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান রংপুর শহরের মেসার্স রানা কনস্ট্রাকশনের পরিচালকমণ্ডলীর সদস্য মো. নাজমুল আলম মামলাটির বাদী হয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বুধবার বেলা ৩টার দিকে যুবদল নেতা মাহফুজার রহমান (৪০), ফজলুর রহমান (৩৫) ও আবদুর রহিম (৪২) মোটরসাইকেল যোগে তিস্তা সড়ক সেতু পার হচ্ছিলেন। তারা টোল প্লাজায় এসে টোল না দিয়ে যেতে থাকলে থামার জন্য সংকেত দেন টোল প্লাজার কর্মীরা। তারা টোল দেবেন না, এমনকি তাদের আরও যত গাড়ি আছে, সেই গাড়িগুলোও টোল দেবে না বলে হুমকি-ধমকি দেন। এ সময় তাদের সঙ্গে টোল প্লাজার কর্মীদের কথা–কাটাকাটি হয়। এরপর রাত ৮টার দিকে মাহফুজার রহমানের নেতৃত্বে মামলার এজাহারভুক্ত আসামিসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০-২৫ জনের একটি দল দা, ছোরা, লোহার রড ও দেশি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মোটরসাইকেল ও অটোযোগে এসে টোল প্লাজায় হামলা চালান। হামলাকারীরা কর্মচারীদের মারপিট করেন।
এ সময় টোল প্লাজার কর্মচারী মো. জুয়েল ইসলামকে (৩৭) মারপিট ও ভয়ভীতি দেখিয়ে টোল প্লাজার ক্যাশবাক্স থেকে ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রধান আসামি মাহফুজার ছিনিয়ে নেন। এ সময় টোল প্লাজায় ভাঙচুর করা হয়। টোল প্লাজায় কর্মরত কর্মীরা প্রাণভয়ে দৌড়ে পাশে থাকা আরেক ক্যাশঘরে প্রবেশ করেন। এ সময় সেখানেও হামলা চালানো হলে টোল প্লাজার ম্যানেজার সুরুজ্জামান (৪০) গুরুতর আহত হন। সুরুজ্জামানের ক্যাশবাক্স থেকে মিঠু (৩৮) ও আবদুর রহিম (৪২) নামের দুজন ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে সুরুজ্জামান (৪০) ও জুয়েল ইসলাম (৩৭) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এছাড়া টোল প্লাজার আরও দুই কর্মী মোসলেম উদ্দিন (৪০) ও আক্কাস আলী রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। আহত আরেক কর্মী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন, তার নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
মামলার বাদী নাজমুল আলম এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আসামিরা টোল প্লাজার কর্মীদের বিনা দোষে বিনা উসকানিতে মারপিট করে গুরুতর আহত করেছেন। নগদ ১৪ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ১৪ লাখ টাকা উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি।”
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরনবী বলেন, “তিস্তা সেতুর টোল প্লাজায় হামলার সংবাদ পেয়ে বুধবার রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্তের পাশাপাশি আসামিদের গ্রেপ্তার ও ছিনিয়ে নেওয়া টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।”