লাউতারো মনোনয়ন না পাওয়ায় ইন্টার প্রেসিডেন্টের ক্ষোভ
গত মৌসুম থেকে দারুণ ছন্দে রয়েছেন ইন্টার মিলানের আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড লাউতারো মার্তিনেস। ইতালিয়ান ক্লাবটির পাশাপাশি জাতীয় দলের জার্সিতেও মাঠে আলো ছড়িয়ে চলেছেন এই ফুটবলার। তবে তা স্বত্ত্বেও ফিফার ‘দ্য বেস্ট’-এর সংক্ষিপ্ত তালিকায় তাকে মনোনীত না করায় মোটেও খুশি নয় ইন্টার মিলান কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার ফিফার ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের দ্য বেস্টের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ১১ জনের ওই সংক্ষিপ্ত তালিকায় রিয়াল মাদ্রিদের ৬ খেলোয়াড়সহ আছে ব্যালন দ’র জয়ী রদ্রি ও মেসির নাম। তবে ইন্টারের হয়ে ঘরোয়া ডবল ও আর্জেন্টিনার জার্সিতে কোপা আমেরিকা জিতেও ফিফার সেরাদের তালিকায় স্থান করে নিতে পারেননি লাউতারো।
এ বিষয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন নেরাজ্জুরিদের প্রেসিডেন্ট বেপ্পে মারোত্তা। ২০২৩-২৪ মৌসুমে মোট ৪৪ ম্যাচে ২৭ গোল করে ইন্টারকে স্কুদেত্তো ও ইতালিয়ান সুপার কাপ জিতিয়ে এবং আর্জেন্টিনার জার্সিতে ১৬ ম্যাচে ১১ গোল করে দলটিকে কোপা আমেরিকা জিতিয়েও কীভাবে ২৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড মনোনয়ন পান না, তা বুঝতে পারছেন না মারোত্তা।
ফিফার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘অসাধারণ একটি মৌসুম কাটানোর পরও লাউতারোকে ফিফা দ্য বেস্ট মেন’স প্লেয়ারের জন্য মনোনীত না করাটা সত্যিই আশ্চর্যের, একইসঙ্গে বিষয়টি হতাশারও। কোপা আমেরিকায় সে সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিল, লিগেও (সেরি-আ) তা-ই। লাউতারো আরও বেশি সম্মান ও স্বীকৃতি পাওয়ার দাবি রাখে।’
গত মৌসুমটি সত্যিই লাউতারো মার্তিনেসের জন্য অসাধারণ এক মৌসুম ছিল। ইন্টারকে ১৯তম স্কুদেত্তো জেতানোর অভিযানে মৌসুমজুড়ে দারুণ পারফর্ম করেন তিনি। সেরি-আয় গত মৌসুমের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি লিগের গোল্ডেন বুটও (সর্বোচ্চ গোলদাতা) জিতেছেন ইন্টার অধিনায়ক।
ইতালিয়ান সুপাকাপের ফাইনালে তার একমাত্র গোলেই নাপোলিকে হারায় ইন্টার মিলান। ফাইনাল ম্যাচের সেরা ফুটবলারও হন এই আর্জেন্টাইন।
এরপর জাতীয় দলের জার্সিতে আর্জেন্টিনার টানা দ্বিতীয় কোপা আমেরিকা জয়ে তার ছিল বড় ভূমিকা। ফাইনালে ২৭ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকারের একমাত্র গোলেই চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে জেতেন কোপা আমেরিকার গোল্ডেন বুটও।
সব মিলিয়ে গত মৌসুমে ৫৮ ম্যাচে ৩৫ গোল ও ৮ অ্যাসিস্টের মাধ্যমে মোট ৪৩ গোলে অবদান রাখেন তিনি।
এমনকি, ক্লাব ও জাতীয় দলে ভূমিকার জন্য লাউতারোর আর্জেন্টাইন সতীর্থ লিওনেল মেসিকে মনোনীত করা হলেও একই রকম অর্জন নিয়ে বাদ পড়েছেন তিনি।
এ বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করে মারোত্তা বলেন, ‘গত মৌসুমে ট্রফি ও পরিসংখ্যানের বিচারে তার যা অর্জন, শুধু সেসবকেই অবহেলা করা হয়নি, মৌসুমজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে সে যেভাবে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে, তাও হিসাবে ধরা হয়নি।’
‘এটি ভালো ইঙ্গিত নয়। দলের জন্য যেসব খেলোয়াড় এমন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন, তাদের অবশ্যই স্বীকৃতি দেওয়া উচিৎ। আশা করি, মাঠে নিজেদের উৎসাহ ধরে রাখতে ভবিষ্যতে লাউতারোর মতো খেলোয়াড়রা তাদের যোগ্য স্বীকৃতি পাবে।’
উল্লেখ্য, এ বছরের ব্যালন দ’রের চূড়ান্ত তালিকার সাত নম্বরে ছিলেন লাউতারো মার্তিনেস। তবে ফিফা এই স্ট্রাইকারকে সেরাদের তালিকায় রাখেনি।
‘দ্য বেস্ট’-এর ১১ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পেয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের ৬ খেলোয়াড়- ভিনিসিউস জুনিয়র, জুড বেলিংহ্যাম, দানি কারভাহাল, ফেদেরিকো ভালভার্দে, টনি ক্রুস ও কিলিয়ান এমবাপে; ম্যানচেস্টার সিটির দুজন- ব্যালন দর জয়ী রদ্রি ও আর্লিং হালান্ড; বায়ের লেভারকুজেনের ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টস; বার্সেলোনার বিস্ময়বালক লামিন ইয়ামাল এবং ইন্টার মায়ামির আর্জেন্টাইন মায়েস্ত্রো লিওনেল মেসি।