মৌসুম শেষ কামাভিঙ্গার, ফাইনালে আলাবাকে নিয়ে সংশয়ে রিয়াল


গেতাফের বিপক্ষে কোনোরকমে জিতে লা লিগার শিরোপার দৌড়ে টিকে থাকলেও কোপা দেল রের ফাইনালের আগে দুঃসংবাদ দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। চোটের কারণে মৌসুম শেষ হয়ে গেছে মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার। এছাড়া ফাইনালে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছেন ডিফেন্ডার দাভিদ আলাবাও।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে আরদা গুলেরের গোলে গেতাফেকে ১-০ ব্যবধানে হারায় রিয়াল মাদ্রিদ। আলাবা শুরুর একাদশে থেকে ম্যাচ শুরু করলেও দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামেন কামাভিঙ্গা। তবে দুজনকেই মাঠ ছাড়তে হয় অস্বস্তি নিয়ে।
ম্যাচশেষে আনচেলত্তি জানান, কামাভিঙ্গা ও আলাবা পেশিতে টান পেয়েছেন। ফলে বার্সেলোনার বিপক্ষে ফাইনালে তাদের পাওয়ার আশা করছেন না তিনি।
কোচের সেই আশঙ্কা সত্যি করে আজ (বৃহস্পতিবার) এক বিবৃতিতে রিয়াল মাদ্রিদ জানিয়েছে, কামাভিঙ্গার বাঁ পায়ের অ্যাডাক্টর টেন্ডন সম্পূর্ণ ছিঁড়ে গেছে। ফলে অন্তত তিন মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে এই মিডফিল্ডারকে।
ফলে মৌসুমই শেষ হয়ে গেছে এই ফরাসি মিডফিল্ডারের। এমনকি আসন্ন ক্লাব বিশ্বকাপও খেলতে পারবেন না তিনি।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম কোপের রিয়াল মাদ্রিদ বিটের সাংবাদিক আরানচা রদ্রিগেস জানিয়েছেন, তিন মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে কামাভিঙ্গাকে। আগস্টের মাঝামাঝি লা লিগার পরবর্তী মৌসুম শুরুর হওয়ার সময় দলে ফিরবেন এই মিডফিল্ডার।
কামাভিঙ্গাকে স্থায়ীভাবে হারালেও আলাবাকে নিয়ে যে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন আনচেলত্তি, সে বিষয়ে অবশ্য কিছুটা স্বস্তির খবর মিলেছে। আরানচা জানিয়েছেন, আলাবার চোট ততটা গুরুতর নয়। আগামীকাল (শুক্রবার) তিনি যদি খুব বেশি অসুস্থ বোধ না করেন, তাহলে দলের সঙ্গে সেভিলে যেতে পারেন।
সেভিলের লা কার্তুহা স্টেডিয়ামে শনিবার কোপা দেল রের ফাইনালে মাঠে নামবে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। এই ম্যাচের আগে কামাভিঙ্গার ছিটকে যাওয়া ও আলাবাকে নিয়ে সংশয় থাকায় রিয়ালের লেফট ব্যাক পজিশনে এখন একমাত্র নাম ফ্রান গার্সিয়া। তবে চলতি মৌসুমে তার পারফরম্যান্স খুব বেশি আশা জাগানিয়া নয়। ফলে ১৭ বছর বয়সেই ফুটবল বিশ্বের আলো কেড়ে নেওয়া লামিন ইয়ামালকে আটকাতে কী কৌশল অবলম্বন করবেন আনচেলত্তি, তার ওপর দলের সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করছে।
ফাইনাল ম্যাচে দলটির বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় খেলতে পারবেন না। এদের মধ্যে দানি কারভাহাল ও এদের মিলিতাও চোট পেয়ে বেশ আগেই এই মৌসুমের জন্য দলের বাইরে চলে গেছেন। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হলেন কামাভিঙ্গা। তাছাড়া দাভিদ আলাবা ও ফেরলঁ মঁদির খেলা নিয়েও রয়েছে সংশয়। পাশাপাশি চোটের কারণে কিলিয়ান এমবাপ্পে শনিবারের ফাইনালে খেলতে পারবেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
অন্যদিকে, এই ম্যাচের আগে বার্সেলোনা যে খুব ভালো অবস্থায় আছে, তা নয়। চোটের কারণে কাতালান দলটিও আছে বিপদে।
লেগানেসের বিপক্ষে চলতি মাসের ১২ তারিখের ম্যাচে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে তিন সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে চলে যান দলটির নিয়মিত একাদশের লেফট ব্যাক আলেহান্দ্রো বালদে। এরপর সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে শনিবার (১৯ এপ্রিল) হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়েন চলতি মৌসুমে বার্সার সর্বোচ্চ গোলদাতা রবের্ট লেভানডোভস্কিও। শুধু কোপার ফাইনালই নয়, ইন্টার মিলানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের দুই লেগেও তাকে না পাওয়া শঙ্কায় আছেন হান্সি ফ্লিক।
এছাড়া, পেশির চোটে অনেক আগেই মৌসুম শেষ হয়ে গেছে দলটির মাঝমাঠের দুই খেলোয়াড় মার্ক বের্নাল ও মার্ক কাসাদোর। ডিফেন্ডার আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেন ও গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন অনুশীলনে ফিরলেও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যেই আছেন তারা। মাঠে ফিরতে তাদের আরও কিছুটা দেরি আছে।
তাছাড়া বার্সেলোনার লা লিগা, কোপা দেল রে ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা ম্যাচ খেলার ধকল থাকলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যাওয়ায় কিছুটা হলেও বেশি বিশ্রামের সুযোগ মিলবে রিয়াল মাদ্রিদের। সব মিলিয়ে দলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের ছাড়াই কোপার ফাইনালে শনিবার রাতে মাঠে নামতে হচ্ছে দুই দলকে। ফলে দুই কোচের কৌশল ও ম্যাচ ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করছে কাদের হাতে উঠতে চলেছে এবারের কোপা দেল রে।