দীর্ঘ অপেক্ষার পর মালয়েশিয়া গেলেন ৬০ জন
দীর্ঘ অপেক্ষা ও সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেও মালয়েশিয়া যেতে না–পারা কর্মীদের দেশটিতে পাঠানোর কার্যক্রম শুরু করল সরকার। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) ৬০ জনকে মালয়েশিয়া পাঠানোর মধ্যদিয়ে আজ এ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।
গত বছরের ৩১ মে তারিখের মধ্যে সব ধাপ সম্পন্ন করেও বিভিন্ন জটিলতার কারণে যাত্রা করতে না–পারা বাংলাদেশি কর্মীদের সরকারি উদ্যোগে বোয়েসেল-এর মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এদিন প্রথম দফায় ৬০ জন কর্মী মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী লাউঞ্জে উপস্থিত থেকে মালয়েশিয়াগামী এসব কর্মীদের বিদায় ও শুভেচ্ছা জানান।
এ উপলক্ষ্যে বোয়েসেল আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরও যেতে না পারা কর্মীদের মালয়েশিয়ায় পাঠানোর এই সফলতার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রচেষ্টা এবং মালয়েশিয়া সরকারের আন্তরিকতার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর স্বপ্ন সার্থক হলো।
এ সময় উপদেষ্টা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সমর্থনে আন্দোলন করার দায়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৮৮ বন্দিকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রশঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও আমরা করছি।
তিনি প্রবাসীদের কল্যাণে বর্তমান সরকারের নেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচির কথা তুলে ধরে বলেন, প্রবাসীদের কল্যাণে সরকার বদ্ধপরিকর।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংবর্ধিতদের পক্ষে মালয়েশিয়াগামী কর্মী রণি মিয়া তাদের স্বপ্ন পূরণে প্রধান উপদেষ্টার আন্তরিক উদ্যোগ ও প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টার নিরন্তর প্রচেষ্টার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথিদের মধ্যে বিএমইটি, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, ২০২৪ সালের ৪ অক্টোবর বাংলাদেশ সফরকারী মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস মালয়েশিয়া যেতে না পারা কর্মীদের নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
গত ১৩-১৬ মে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী মালয়েশিয়া সফর করেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ২১-২২ মে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার ৩য় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ-এর সভায় ১৭,৭৭৭ জন কর্মীর মধ্যে গত গত বছরের ৩১ মে-র মধ্যে মালয়েশিয়া যেতে না পারা মোট ৭৮৭৩ জন কর্মীকে পাঠানোর জন্য বোয়েসেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
কেবল কনস্ট্রাকশন ও ট্যুরিজম এ দুটি খাতে কর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গত ৭ আগস্ট কন্সট্রাকশন লেবার এক্সচেঞ্জ সেন্টার বারহাদের (CLAB) সঙ্গে কর্মী পাঠানো বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
উদ্যোগের প্রথম ধাপে, মালয়েশিয়ার নিয়োগকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান কন্সট্রাকশন লেবার এক্সচেঞ্জ সেন্টার বারহাদ (CLAB) থেকে ৫০০ জন কর্মীর চাহিদা পাওয়া যায়। ইতোমধ্যে এই ৫০০ জনের মধ্যে ২৫৫ জন কর্মীর ভিসা পাওয়া গেছে এবং তাদের চূড়ান্ত গমনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
