বিএনপি নেতার ‘ধর্মীয়’ বক্তব্য নিয়ে যা বললেন মির্জা গালিব

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশিত:২৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৪১ পিএম
বিএনপি নেতার ‘ধর্মীয়’ বক্তব্য নিয়ে যা বললেন মির্জা গালিব
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ ও যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব।

সম্প্রতি রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সম্মিলিত ইমাম-খতিব জাতীয় সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জাতীয় ইমাম আখ্যা দেন। পাশাপাশি তিনিসহ দলটির বেশ কয়েকজন নেতা বেশ কিছু ইসলামিক শব্দ ব্যবহার করেন তাদের বক্তৃতায়।

ওই অনুষ্ঠানে ইসলামিক কিছু শব্দ ব্যবহার করে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনের দেওয়া সেই ‘ধর্মীয়’ বক্তব্যের কিছু অংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমত ভাইরাল। বিষয়টি নিয়ে ট্রোলসহ হচ্ছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

তবে বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব।

তিনি বলেছেন, দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিও ইসলামকে ধারণ করবে, এটাই স্বাভাবিক।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা গালিব বলেন, বিএনপি যদি বেশি করে ইসলামিক শব্দ/ভোকাবুলারি ব্যবহার করা শুরু করে, ইসলামিস্ট হিসাবে আমি বরং খুশিই হব।

এর কারণ ব্যাখ্যা করে ঢাবি ছাত্রশিবিরের সাবেক এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান। ইসলাম আমাদের ধর্ম, কালচার, এবং আইডেন্টিটি। আমাদের এখানকার সব প্রধান রাজনৈতিক দল ইসলামকে তার নিজের আইডেন্টিটি বলে মনে করবে- এটাই স্বাভাবিক এবং কাম্য।

হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সহকারী অধ্যাপক বলেন, ইসলামকে অস্বীকার করে বা ইসলামিক আইডেন্টিটিকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে যে ইসলামোফোবিক সেক্যুলারিজম আমাদের দেশে তৈরি হইছিল, সেটাই বরং আর্টিফিসিয়াল ছিল। পাশ্চাত্যের কলোনিয়াল শাসন আর উনিশ শতকের পশ্চিমবঙ্গীয় রেনেসাঁর প্রভাবেই মূলত এটা তৈরি হয়েছিল। আর স্বাধীন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ-বাম-সেক্যুলার নেক্সাসের মধ্য দিয়ে এটা পরিপুষ্ট হইয়েছিল।

তবে, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনের মধ্য দিয়ে এই ইসলামোফোবিক কালচারেরও পতন হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ড. মির্জা গালিব।

তার মতে, বাংলাদেশের মানুষের এখন ঘরে ফেরার সময়। নিজের পূর্বপুরুষের ইসলামিক/মুসলিম কালচারকে এলিট সাংস্কৃতিক আবহের মধ্যে নতুন করে ধারণ করার সময় এখন।

সামনের দিনে দল-মত নির্বিশেষে ইসলাম বাংলাদেশের সকল মুসলমানের বিশ্বাস, কালচার, আইডেন্টিটি আর ধর্ম হয়ে উঠবে বলেই প্রত্যাশা মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষকের।

পাশাপাশি বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক দলের কাছেও ভালোকিছু প্রত্যাশা করেন ড. মির্জা গালিব।

তিনি বলেন, দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিও তাই ইসলামকে ধারণ করবে, এইটাই স্বাভাবিক। জিয়াউর রহমান ৭২-এর সেক্যুলার সংবিধান পরিবর্তন করে ‘আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ যোগ করেছিলেন। বিএনপির বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ-এর যে ধারণা, ইসলাম সেইখানে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কাজেই বিএনপি যদি ইসলামিক ভোকাবুলারি (শব্দ) বেশি বেশি ব্যবহার করে বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি করতে চায়, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের রাজনীতি করতে চায়- তাহলে সেটাই বিএনপির সঠিক রাজনীতি।

তার মতে, বিএনপি সহীহ ইসলামি দল না- এই কথা বলে বিএনপির এই রাজনীতির সমালোচনা করার মধ্যে কোনো লাভ নাই।

উল্টো প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, বিএনপি যদি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের মতো একটা সেক্যুলার দল হয়ে ওঠে- তাতে আপনার-আমার লাভটা কি?