‘বাউল আবুল সরকারের মুক্তি নয়, কঠোর শাস্তি চাই’
ইসলাম ধর্ম ও মহান সৃষ্টিকর্তাকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় কারাবন্দি বাউল শিল্পী আবুল সরকারের কঠোর শাস্তি চাইলেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ দাবি জানান।
রাশেদ খান বলেন, বাউল আবুল সরকারের মুক্তি নয়, কঠোর শাস্তি চাই। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী তার যথাযোগ্য শাস্তি হলে পরবর্তীতে কেউ আর এমন কটুক্তি করবেনা।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এই বাউলের বক্তব্য একটু আগে শুনলাম। তিনি সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে এ ধরনের কটুক্তি করেছেন।’
রাশেদ খান এ সময় আবুল সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনি শিল্পী, আপনার শিল্পচর্চায় কেউ বাধা দেবেনা। কিন্তু আপনি আল্লাহ ও ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করতে পারেন না।’
এমনকি হিন্দু ধর্ম ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নিয়েও কটুক্তি করার অধিকার কারও নাই উল্লেখ করে সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, সবাই স্বাধীনভাবে এই দেশে ধর্মপালনের অধিকার পাবে, কিন্তু ধর্ম নিয়ে কটুক্তির অধিকার কারও নাই।’
অভিযুক্ত বাউলের মুক্তি দাবিকারীদের উদ্দেশে গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, ‘যারা বাউল আবুল সরকারের মুক্তি চাচ্ছেন, তারা আগে বাউল আবুল সরকারের বক্তব্য শুনুন। সে সমগ্র মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে, বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করেছে।’

বাউল সরকারের শাস্তি চেয়ে রাশেদ খান বলেন, ‘বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী তার যথাযোগ্য শাস্তি হলে পরবর্তীতে কেউ আর এমন কটুক্তি করবে না। আমরা সমাজে শান্তি চাই। ধর্ম নিয়ে বিতর্ক এবং বিভাজন চাই না।’
এর আগে সিনিয়র সাংবাদিক ও লেখক মানিক মুনতাসির বাউল আবুল সরকারের অপরাধের জন্য আদালতের মাধ্যমে যথাযথ বিচার দাবি করেন।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে করা মামলায় কারাবন্দি বাউল শিল্পী আবুল সরকারের মতো বাউলদের ‘ভণ্ডামী’ ছেড়ে লালন শাহ, শাহ আবদুল করিমদের পথ অনুসরণ করুন।
‘বাউলিয়ানার নামে ভণ্ডামী ছাড়ুন’ শিরোনামের ওই দীর্ঘ পোস্টে মানিক মুনতাসির লেখেন, ‘বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় সাধক বাউল সম্রাট লালন শাহ কিংবা বাউল শাহ আবদুল করিম, বর্তমান সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাধক চিশতি বাউল, ফকির শাহাবুদ্দিন- এদের মধ্যে কেউ কি কখনো সৃষ্টিকর্তাকে কটাক্ষ করে কোনো মন্তব্য করেছেন। শুধু ইসলাম নয়, পৃথিবীর কোনো ধর্ম নিয়েও কি তারা কখনো মনগড়া কোনো বক্তব্য রেখেছেন বা অলীক কোনো গান রচনা করেছেন? নিশ্চই করেন নাই। তাহলে কোথাকার কোন সাধক আবুল সরকাররা যদি এতটাই জ্ঞানী হয়ে থাকেন তবে একখানা বেদ, কিংবা বাইবেল রচনা করে দেখাক না। সেটারও দরকার নাই। তারা দুখানা গান লিখুক লালন কিংবা শাহ আবদুল করিমের মতো। যৌন সুরসুরি আর ধর্মকে কটাক্ষ করে উম্মাদনা তৈরি ছাড়া আর কি এমন যোগ্যতা আছে এই আবুলদের।’
তিনি লেখেন, ‘গতকাল আমি আবুল সরকার ও তার অনুসারীদের পক্ষে বলেছিলাম কারণ তারা ছিল আক্রান্ত। যেহেতু তিনি ধৃত। তিনি অপরাধ করলে বিচার হবে। বিচারাধীন কোনো বিষয়ে আদালত ব্যতিরেকে হস্তক্ষেপ করা ঠিক না। তবে আবুল সরকার কুরআন-হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে যেসব ব্যাখ্যা দিয়েছেন সেগুলো আসলে অপব্যাখ্যা। কারণ কোনো বিষয়ে অল্প-স্বল্প জেনে পাবলিক প্লেসে এসে বক্তব্য দেওয়া কিংবা তা নিয়ে গান বাঁধা চরম বোকামী এবং ভণ্ডামী।’
