আবারও রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি নাহিদ-নাসীরুদ্দীনের
জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করছে উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)'র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ঐকমত্য কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের সংলাপে জাতীয় পার্টি না থাকলেও নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ একটি চক্রান্ত। একই সঙ্গে, এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এনসিপি মাঠে থাকবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জুলাই গণহত্যাকারীদের বিচারের রায় কার্যকর এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও জোটসঙ্গীদের বিচারের দাবিতে আয়োজিত গণমিছিল শেষে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
এ সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হাসিনার বিষয়ে ভারতের উদ্দেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হলে অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে দেশে পাঠাতে হবে।
এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, গত ৫০ বছর ধরে ভারত বন্ধু রাষ্ট্রের নামে বাংলাদেশকে শোষণ করে গিয়েছে। তাদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সহায়তায় বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ চেপে বসেছিল। সেই ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে আবারও তাদের দেশে জায়গা দিয়ে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অব্যাহত রেখেছে। ভারত সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, বাংলাদেশের সাথে যদি সত্যিকার অর্থে সুসম্পর্ক চান, তাহলে অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। আমরা আশা করবো, শেখ হাসিনাকে ফেরত দিয়ে বাংলাদেশের সাথে ভারত নতুন করে সম্পর্ক স্থাপন করবে।
তিনি বলেন, আদালত শেখ হাসিনাকে ফাঁসিতে ঝুলানোর রায় দিয়েছেন। আমরা ট্রাইব্যুনালের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছি। কিন্তু আজকে আমরা রাজপথে নেমেছি, এই রায় যেন অবিলম্বে দ্রুততার সঙ্গে কার্যকর করা হয়। এই রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মজলুম জনতা ইনসাফ পাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ সময়, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে যত ধরনের কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক তৎপরতা প্রয়োজন, এই অন্তর্বর্তী সরকার সেই তৎপরতা শুরু করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো নানা ধরনের তাৎপরতা শুরু করেছে উল্লেখ করে বলেন, আমরা আহ্বান জানাবো- বাংলাদেশের মানুষের সাথে প্রতারণা করে কেউ বিচারের ব্যাপারে আপস করবেন না। তাহলে বাংলাদেশের জনগণ আপনাদেরকে কোনোদিন ক্ষমা করবে না।
সমাবেশে সুস্পষ্ট তিনটি দাবির কথাও জানান এনসিপি আহ্বায়ক। সেগুলো হলো- শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত রায় কার্যকর করা, দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করা এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী দলগুলোকে বিচারের আওতায় আনা।
তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করছে। ঐকমত্য কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের সংলাপে জাতীয় পার্টি না থাকলেও নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ একটি চক্রান্ত বলে উল্লেখ করেন তিনি। সেইসাথে, এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এনসিপি মাঠে থাকবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন নাহিদ।
এ সময় এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ বিগত দিনে পিলখানা, শাপলা ও মোদিবিরোধী আন্দোলনে গণহত্যা চালিয়েছে। জুলাই আন্দোলনের সময় নির্বিচারে গুলি করে মানুষ মেরেছে। লাশ পুড়িয়ে ফেলেছে। আয়নাঘরে নির্যাতন করেছে। তাই তাদের বিচার করতে হবে। আমরা শেখ হাসিনার ফাঁসি কার্যকর দেখতে চাই।
এদিকে, জাতীয় পার্টিকে দিয়ে কিছু আসন পাওয়ার চেষ্টা করছে ফ্যাসিবাদী শক্তি বলে মন্তব্য করেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
তিনি জানান, সিভিল সোসাইটির কিছু লোক আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও চৌদ্দ দল প্রসঙ্গে কথা বলছে। তারা মূলত ব্যাংক লুটেরা।
সেইসঙ্গে, এনসিপি থাকতে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।