ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দিয়ে সরকার দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে: শামসুজ্জামান দুদু


বর্তমান সরকার ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
দুদু বলেন, বাংলাদেশ নষ্টের প্রথম এবং মূল শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধে যার কাছে মানুষের প্রত্যাশা ছিল সীমাহীন। তিনি ৭২ সালে ক্ষমতায় এসে ৭৩ সালে যে নির্বাচন করেন সে নির্বাচনটা ছিল সর্বকালের সেরা দুর্নীতিবাজ লুটপাটের। অনেকগুলো কারণ আছে, তার একটা কারণ হলো দাউদকান্দিতে খন্দকার মোস্তাক হেরেছিল। তার ব্যালট বক্স ঢাকায় এনে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমানের কোনো সম্পর্ক ছিল না, তিনি পাকিস্তানে ছিলেন। কেউ কেউ বলেন আত্মসমর্পণ করেছিলেন বা পালিয়েছিলেন। কিন্তু তার দল ও দলের নেতাকর্মীরা দাবি করেন তিনি মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার ছিলেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডাররা পালিয়ে যান না, আত্মসমর্পণ করেন না।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যেমন স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন তেমনি রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছিলেন। তিনি শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা ও যুদ্ধই করেননি, পরে দেশের স্বাধীনতা রক্ষা, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশের হাল ধরেন এবং আধুনিক বাংলাদেশ গঠন করেন। পরে দেশে যখন আবার স্বৈরাচারের আবির্ভাব হয়, তখন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ ৯ বছর আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে দেশে আবার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি বলেন, গত ১৫-১৬ বছর শেখ হাসিনা যখন দেশে স্বৈরাচার কায়েম করেছেন, তখন দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র আমাদের নেতা তারেক রহমান দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।
এই বিএনপি নতো বলেন, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল বর্তমানে জাতির কাছে ওয়াদা দিচ্ছে তারা ক্ষমতায় এলে এই করবে সেই করবে। ১৯৭১ সালে তারা স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে অস্ত্র ধরে বাঙালির ওপর জুলুম-নির্যাতন করেছে। তারা এখনো জাতির কাছে ক্ষমা চায়নি। আগে ক্ষমা চান, জাতির কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। তারপর কী করবেন না করবেন দেখা যাবে।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, শেখ পরিবার হচ্ছে চোরেদের পরিবার, ব্যাংক লুটের পরিবার, গণতন্ত্র হত্যার পরিবার। আর জিয়া পরিবার হচ্ছে গণতন্ত্রের সপক্ষের, লড়াইয়ের, দেশের স্বাধীনতা রক্ষা, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার পরিবার। সেই পরিবারের সঙ্গে আপনারা আছেন। এখনো কাজ শেষ হয়নি। দেশে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে। জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠন করতে হবে। যেটি একমাত্র নির্বাচনের মাধ্যমে সম্ভব। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই। এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে বর্তমান সরকার, এটা আমরা আশা করি।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ওলামা দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হাফেজ ক্বারী রফিকুল ইসলাম, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনসহ অনেকে।