সৎ ব্যক্তি নেতৃত্বে এলে আ.লীগ কেন রাজনীতি করতে পারবে না, প্রশ্ন রিজভীর

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:২১ মার্চ ২০২৫, ০৮:৪৫ পিএম
সৎ ব্যক্তি নেতৃত্বে এলে আ.লীগ কেন রাজনীতি করতে পারবে না, প্রশ্ন রিজভীর

গণহত্যা-লুটপাটে জড়িত নয়, এমন নিরপরাধ কারও নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আপত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সেইসঙ্গে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘সৎ ব্যক্তি নেতৃত্বে এলে আওয়ামী লীগ কেন রাজনীতি করতে পারবে না?’

শুক্রবার (২১ মার্চ) রাজধানীর উত্তরার দক্ষিণখানে ফায়দাবাদ মধ্যপাড়া হাজী শুকুর আলী মাদরাসা সংলগ্ন মাঠে দুস্থদের মধ্যে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ে কথা হচ্ছে, কিন্তু বিচার নিয়ে কথা হচ্ছে না। দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিচারের পর আওয়ামী লীগকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। আর জনগণ ক্ষমা করলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’

‘আওয়ামী লীগ পুরোনো দল। অপরাধীদের বিচার হওয়ার পর যারা হত্যা-লুটপাটে জড়িত নয়, তাদের যদি জনগণ রাজনীতি করার সুযোগ দেয় আমাদের কিছু বলার নেই।’

তিনি বলেন, ‘যে লোক আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসবেন, তিনি যদি কোনো অপরাধ না করেন, ছাত্র হত্যা না করেন, অর্থ লোপাট বা পাচার না করেন- তাহলে সেই আওয়ামী লীগ কেন রাজনীতি করতে পারবে না? এটি হচ্ছে আমার বক্তব্য।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই রাজনীতিক বলেন, ‘যারা টাকা পাচার করেছে, যারা শিশু-কিশোর, আহনাফ, আবু সাঈদ, মুগ্ধদের হত্যা করেছে, এসব ঘটনায় জড়িতদের বিচার হতে হবে। শ্রমিক, রিকশাচালক, ছাত্র-ছাত্রী যাদের হত্যা করেছে, তাদের বিচার আমরা করি না কেন?’

তিনি বলেন, ‘অনেক কথা উঠেছে- আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে কিনা। কিন্তু এই কথা উঠছে না, যারা গণহত্যা চালিয়েছে তাদের বিচার হবে কিনা।’

‘কারা (গণহত্যা) চালিয়েছে—এটা কি মানুষ দেখেনি? কোন পুলিশের ওসি, ডিসি, এসি এখানে ভূমিকা রেখেছে? কার নির্দেশে এসব ঘটেছে? রক্তপাত ঘটানোর জন্য আওয়ামী লীগের কোন নেতারা নির্দেশ দিয়েছেন?’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘শেখ হাসিনা আল্লাহকে বিশ্বাস করতেন কিনা সন্দেহ আছে। তার ঈশ্বর বা সৃষ্টিকর্তা ছিল টাকা। যার ঈশ্বর টাকা হয়, তিনি তো কোনোদিন ভালো কাজ করবেন না। তাদের প্রত্যেকেরই ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘরবাড়ি আছে। তারা সরকারি অর্থ লোপাট করেছে, ব্যাংক খালি করে দিয়েছে। লাখো কোটি টাকা পাচার করেছে। এ পাচারে অধিকাংশই শেখ হাসিনার আত্মীয়স্বজন পছন্দের লোকজন জড়িত। তাদের তো বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘মিথ্যা অঙ্গীকার দিয়ে তারা দুবার ক্ষমতায় এসে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। একবার তার বাবা সব দল বন্ধ করে দিয়ে বাকশাল করলেন, আর তার মেয়ে নতুন কায়দায় নতুনভাবে আরও ভয়াবহ বাকশাল তৈরি করে বিরোধী দলের কথা বলা, মানুষের কথা বলা, যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ন্যূনতম কেউ আওয়াজ করলে তার স্থায়ী ঠিকানা হয় কারাগার, আর অস্থায়ী ঠিকানা হয় তার বাড়ি। এই ছিল শেখ হাসিনার আমল। সুতরাং সেই রাজত্ব যাতে ফিরে না আসে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ফ্যাসিবাদের হালুয়া-রুটি যে খেয়েছে, তার বিচার করতে হবে। যে মাংস খেয়েছে এবং ওই মাংসের ঝোল খেয়েছে, তারও বিচার হতে হবে। তাহলে ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটানোর চেষ্টা আর কেউ করবে না।’