শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন বিধিমালা জারি

Bangla Post Desk
নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশিত:২৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:২৭ পিএম
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন বিধিমালা জারি
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীসহ সারা দেশে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে নতুন শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। 

সোমবার (২৪ নভেম্বর) ‘শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬’ হালনাগাদ করে ‘শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫’ শীর্ষক নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। 

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) প্রকাশিত সরকারি তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, পূর্বের বিধিমালায় একাধিক সীমাবদ্ধতা থাকায় এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছিল। সেসব সীমাবদ্ধতা দূর করে নতুন চাহিদা, বাস্তবতা এবং প্রযুক্তিগত বিবেচনা যুক্ত করে হালনাগাদ শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ প্রণয়ন করা হয়েছে।

আগের বিধিমালায় কেবল ম্যাজিস্ট্রেটদের ক্ষমতা দেওয়ার বিধান থাকায় সীমিত জনবল দিয়ে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়নি। এজন্য নতুন বিধিমালায় ম্যাজিস্ট্রেটদের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য হিসেবে ট্রাফিক পুলিশের ক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়েছে (ট্রাফিক সার্জেন্টের নিচের পদ নয়। 

ফলে, এখন যদি কোনো ব্যক্তি ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট পদমর্যাদার নিচে নন- এমন কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সামনে বিধি ৬ এর উপ-বিধি (২), (৩) বা (৪) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহলে ওই কর্মকর্তা ঘটনাস্থলেই তাকে জরিমানা আরোপ করতে পারবেন। 

কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা, এ উদ্যোগ শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে নতুন গতি আনবে।

শব্দদূষণের অন্যতম বড় উৎস হর্ন ব্যবহারের ক্ষেত্রে আগের বিধিতে আমদানি, উৎপাদন, মজুত ও বিক্রি সংক্রান্ত কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না থাকায় তদারকিতে বড় সীমাবদ্ধতা ছিল।

নতুন বিধিতে এ বিষয়ে স্পষ্ট শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়েছে। ফলে অনিয়ন্ত্রিত হর্ন ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নতুন বিধিমালায় আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—

  • কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো পাবলিক প্লেস বা জনপরিসরে লাউডস্পিকার, মাইক, অ্যাম্প্লিফায়ার ও সুরযন্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ; 
  • প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলে বনভোজন নিষিদ্ধ; 
  • যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে শব্দসীমা ৯০ ডেসিবল নির্ধারণ এবং অনুষ্ঠান রাত ৯টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা; 
  • নীরব এলাকায় পটকা, আতশবাজি, হর্ন বা অনুরূপ শব্দ সৃষ্টিকারী যেকোনো পণ্য ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ; 
  • রাতে নির্মাণকাজ বন্ধ; 
  • শিল্পকারখানা ও জেনারেটরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন বিধান সংযোজন এবং সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দণ্ড নির্ধারণ।

তথ্য বিবরণীতে আরও বলা হয়, সরকার বিভিন্ন সময়ে অংশীজনদের নিয়ে সভা ও কর্মশালা শেষে খসড়া প্রস্তুত করে। পরবর্তীতে সব মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে এবং জনগণের মতামতের জন্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে খসড়া উন্মুক্ত করা হয়। 

এছাড়া বিভিন্ন দেশের বেস্ট প্র্যাকটিস পর্যালোচনা করে ২০০৬ সালের বিধিমালায় থাকা দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করা হয় এবং বাস্তবতার নিরিখে সেগুলো নতুন শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।