লিভার ভালো রাখতে যে ৫ খাবার খাবেন

আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো লিভার। যা নানা জটিল কাজের সঙ্গে জড়িত—বিশেষ করে রক্ত পরিশোধন, শক্তি সঞ্চয়, হজমে সহায়তা এবং টক্সিন দূর করার মতো গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলি। কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত ওষুধ সেবন, অ্যালকোহল গ্রহণ কিংবা দূষণ- এসব কারণে লিভারের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ব্যাহত হতে পারে। তাই লিভারকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে হলে আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় এমন কিছু খাবার রাখতে হবে, যেগুলো লিভার পরিষ্কার রাখে ও তার কাজকে সহায়তা করে।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, লিভার ভালো রাখতে কোন ৫ খাবার প্রতিদিন খেতে হবে-

১. পেঁয়াজ

পেঁয়াজ সালফার যৌগ দিয়ে পূর্ণ যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে এনজাইমগুলোকে সক্রিয় করে, বিশেষ করে যখন লিভারের কথা আসে। এতে কোয়ারসেটিন নামে একটি উপকারী যৌগ রয়েছে, যা একটি উদ্ভিদ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারের কোষকে যেকোনো ধরনের অক্সিডেটিভ ক্ষতি এবং যেকোনো অঙ্গের প্রদাহ থেকে রক্ষা করে। প্রতিদিন পেঁয়াজ খেলে তা লিভারকে বর্জ্য বিপাকে সাহায্য করে এবং ডিটক্সিফিকেশন উন্নত করে।

২. কুমড়া

​কুমড়া বিটা-ক্যারোটিন, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ যা লিভারের টিস্যুকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এর কোমল পুষ্টি উপাদান খাবার হজমে সাহায্য করে যার ফলে শরীর সহজেই বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে পারে। কুমড়ায় থাকা ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমায় এবং লিভারে চর্বি জমা কমায়। কুমড়া পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফোলেটের একটি ভালো উৎস, এগুলো সবই লিভার-বান্ধব পুষ্টি, যা লিভারের কার্যকারিতায় সহায়তা করে।

৩. বিটেরুটের রস

লিভারের জন্য শক্তিশালী অস্ত্র বিটরুট পুষ্টিতে সমৃদ্ধ এবং লিভারকে ডিটক্সিফাইং করতে সহায়তা করে। বিটের রসে উপস্থিত বিটালাইন এবং নাইট্রেট রক্ত ​​সঞ্চালন উন্নত করে এবং লিভারের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। এই যৌগগুলো লিভার দ্বারা বিষাক্ত পদার্থ নির্মূল করতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষ নিরাময়ে সহায়তা করে। প্রতিদিন বিটের রস খেলে পিত্ত উৎপাদনও ভালো হয়, যা হজম এবং চর্বি বিপাকের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৪. গ্রিন টি

আমরা সবাই গ্রিন টি-এর ওজন কমানোর উপকারিতা সম্পর্কে জানি, কিন্তু আমরা হয়তো যা জানি না তা হলো, এর মৃদু কিন্তু শক্তিশালী লিভারের স্বাস্থ্য উপকারিতা। এতে ক্যাটেচিন রয়েছে, এই্ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারে চর্বি জমা কমায় এবং লিভারের এনজাইমের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে, যারা নিয়মিত গ্রিন টি পান করেন তাদের নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। গ্রিন টি শক্তিও বাড়ায় এবং বিপাকক্রিয়ায় লিভারের কার্যকারিতা বজায় রাখে।

৫. বাঁধাকপি

বাঁধাকপির উপকারিতা জেনে আপনি অবাক হবেন। এটি লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য সেরা সবজির মধ্যে একটি। বাঁধাকপি একটি ক্রুসিফেরাস সবজি যা ডিটক্সিফাইং এনজাইম বৃদ্ধি করে। এতে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা হজম এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়তা করে। এতে গ্লুকোসিনোলেট রয়েছে, যা হজম প্রক্রিয়া এবং লিভারকে পরিশোধনকারী এনজাইম নিঃসরণে সহায়তা করে। যদি প্রতিদিন এক বা অন্য আকারে খাওয়া হয় তবে এটি ফ্যাটি লিভার তৈরিতে বাধা দেবে এবং প্রদাহ কমাবে।