জিএসপি সুবিধা বহাল রাখতে নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতা চাইলো বাংলাদেশ

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০৩ এএম
জিএসপি সুবিধা বহাল রাখতে নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতা চাইলো বাংলাদেশ
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে ষষ্ঠ পররাষ্ট্র দফতরের আলোচনা আজ বৃহস্পতিবার সকালে হেগে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম এবং নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাসচিব ক্রিস্টিয়ান রেবারগেন নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।

দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং অভিন্ন মূল্যবোধের পরিবেশে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

উভয় প্রতিনিধি দল চলতি সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে পর্যালোচনা করে এবং আরও সহযোগিতার সম্ভাবনা চিহ্নিত করে। উভয়পক্ষই শান্তি ও উন্নয়নের অভিন্ন লক্ষ্য পূরণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।

বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহায়তার জন্য ডাচ সরকারকে ধন্যবাদ জানায়। ডাচ পক্ষ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সুসংহত করতে এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের সমর্থন অব্যাহত রাখার আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করে।

উভয় প্রতিনিধি দল দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি, বিনিয়োগ ও যৌথ উদ্যোগের প্রসার এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার নতুন সম্ভাবনা অন্বেষণের উপায় নিয়ে আলোচনা করে। বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তী সময়ে বিশেষ করে ইইউ’র জিএসপি+ স্কিমের আওতায় অব্যাহত বাজার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে নেদারল্যান্ডসের সহায়তার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে।

উভয়পক্ষ নেদারল্যান্ডসের যথেষ্ট প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং দেশের টেকসই ভবিষ্যৎ গঠনে ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ এর কৌশলগত গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে পানি ব্যবস্থাপনা এবং দুর্যোগ প্রতিরোধে তাদের চলমান সহযোগিতার প্রতিফলন দেখিয়েছে। তারা কৃষি, টেকসই শক্তি, বন্দর ও লজিস্টিক পরিকাঠামো, জাহাজ নির্মাণ এবং জাহাজ ভাঙার পাশাপাশি ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করে। পরামর্শ সভায় শিক্ষা, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং জ্ঞান বিনিময়ের ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব জোরদার করার ওপরও জোর দেওয়া হয়।

দুই প্রতিনিধি দল গাজার শান্তি প্রক্রিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি এবং একটি অবাধ, উন্মুক্ত ও সমন্বিত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের গুরুত্বসহ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ঘটনাবলী নিয়ে মতবিনিময় করে।  তারা জাতিসংঘের ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার এবং জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সঙ্কট মোকাবিলায় অভিন্ন দায়িত্ব এবং ন্যায়সঙ্গত উন্নয়নে আর্থিক সহায়তার ওপর জোর দেন।

বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান অর্জনের প্রচেষ্টায় নেদারল্যান্ডসের ধারাবাহিক সমর্থনের প্রশংসা করেন। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতার জন্য সহায়তা, ন্যায়বিচার এবং জবাবদিহিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মিয়ানমারে তাদের মাতৃভূমিতে দ্রুত প্রত্যাবর্তনের জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর উভয় পক্ষ জোর দিয়েছে।

উভয় পক্ষ পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়সূচিতে আগামী বছর ঢাকায় পরবর্তী বৈঠক করার বিষয়ে একমত হয়েছে।