অর্থনৈতিক রূপান্তরে চীনের সঙ্গে সহযোগিতা অপরিহার্য: উপদেষ্টা ফরিদা


মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, চীনের সঙ্গে সহযোগিতা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক রূপান্তরের জন্য অপরিহার্য। দুই দেশের মধ্যে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়িয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হবে।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) প্রধান অডিটোরিয়ামে ঢাকা-চায়না ডে ২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদ চীন থেকে উৎপন্ন হয়ে ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবাহিত। এ নদী দুই দেশের সম্পর্কেরও এক গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র।
ফরিদা জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা গত ২৬ মার্চ চীন সফরে গিয়ে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছেন। এসব চুক্তি ও সমঝোতা সংস্কৃতি, গণমাধ্যম, ক্রীড়া, স্বাস্থ্যখাতসহ বহুমুখী ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করবে। এ সহযোগিতা বিশেষভাবে তরুণ প্রজন্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারাই দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি এবং পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের জেলে, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, গবেষক ও বিজ্ঞানীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশ এখন প্রায় মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মাছ ও মাছজাত পণ্য শুধু অভ্যন্তরীণ চাহিদাই পূরণ করছে না, বরং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
ফরিদা বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে চীন বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে রয়েছে এবং এ সম্পর্ক দিন দিন আরও সুদৃঢ় হচ্ছে।
ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-চীনের সহযোগিতা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এ সহযোগিতা অ্যাকুয়াকালচার প্রযুক্তি উন্নয়ন, উৎপাদন বৃদ্ধির আধুনিক পদ্ধতি, আইওটি-ভিত্তিক প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু সহনশীল পশু আবাসন, রোগ নিয়ন্ত্রণ, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধ ব্যবস্থা, মাছ অবতরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের আধুনিকীকরণ এবং শুকনো মাছ ও মূল্য সংযোজন শিল্পে বিনিয়োগের বিস্তৃত সম্ভাবনা তৈরি করবে। এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরও শক্তিশালী করবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ঢাকা-চায়না ডে অনুষ্ঠান চীন ও বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রতিফলন। এটি বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে তরুণ শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে চীনা সংস্কৃতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য তুলে ধরছে, যা চীন ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে গভীর বোঝাপড়া ও বন্ধন গড়ে তুলবে।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক এখন এক ঐতিহাসিক মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। উন্নয়ন সহযোগিতা ও অন্যান্য খাতে চীন-বাংলাদেশ হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাচ্ছে।
এনএসইউর উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এনএসইউ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা আজীবন সদস্য ও বোর্ড অফ ট্রাস্টি সদস্য বেনজীর আহমেদ। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও চীনের কূটনীতিক, শিক্ষাবিদ, গবেষক, ব্যবসায়ী এবং শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।