কেউ ফাউল করার নিয়তে মাঠে নামবেন না: সিইসি

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:০০ পিএম
কেউ ফাউল করার নিয়তে মাঠে নামবেন না: সিইসি

নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে ‘ফাউল করা’ থেকে দূরে থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসিরউদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘যারা খেলবেন তারা যদি ফাউল করার নিয়তে সবাই মাঠে নামেন, তাহলে মুশকিল। কেউ ফাউল যাতে না করতে পারেন তার যাবতীয় ব্যবস্থা আমরা নেব। যারা স্টেকহোল্ডার, যারা খেলবেন নির্বাচনের মাঠে, তারা ফাউল করার নিয়তে নামবেন না- বলে আমি বিশ্বাস করি এবং একটা ভালো নির্বাচন হবে।’

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সিইসি আরও বলেন, ‘একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড যাতে হয়, সবাই যাতে সুন্দরভাবে খেলতে পারে, সেই সে ব্যবস্থাটা করে দেবো। সেটা আমরা ইনশাল্লাহ করে দেবো এবং সর্বশক্তি নিয়োগ করবো।’

 

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে কি-না জানতে চাইলে এ এম এম নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘এই প্রশ্ন তো অনেকে করে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার জন্যই আমাদের চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। আগামী বছর ফেব্রুয়ারির রমজানের আগে প্রথমার্ধে নির্বাচন করার জন্য যা যা প্রস্তুতি নেওয়া দরকার আমরা জোরেশোরে নিচ্ছি। আমরা কারও কোনও কথায় চলতে চাই না। বিবেকের তাড়নায় চলি। আইন-কানুন মত চলতে চাই। কনস্টিটিউশন (সংবিধান) মত চলতে চাই এবং একটা সরল সোজা পথে চলতে চাই। কোনও বাঁকা পথে নয়। কাউকে কোনও ফেভার করার জন্য না, নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে চাই।’

এ এম এম নাসিরউদ্দিন বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার জন্য আমাদের চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। আগামী বছর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে রমজানের আগে নির্বাচন করার জন্য যা যা প্রস্তুতি নেওয়া দরকার, আমরা জোরেসোরে তা নিচ্ছি।’

 

নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন কবে হবে- জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘দলগুলো নিয়ে আমাদের কিছু অ্যাডিশনাল ইনফরমেশন কালেক্ট করতে হচ্ছে। রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার নিয়ত করে আমাকে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরে কোনও অভিযোগ যদি আসে, সেগুলো আবার এড্রেস করতে হবে।’

নতুন কতগুলো দল নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে সে সংখ্যা চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন সিইসি। তিনি বলেন, ‘এখন বলা যাচ্ছে না, আমাদের আরও অ্যাডিশনাল ইনফরমেশন সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এগুলা যখন চূড়ান্ত হবে তখন হয়তো বলা যাবে।’

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) শাপলা প্রতীক পাচ্ছে কি-না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘এর আগে মাহমুদুর রহমান মান্নার দল নাগরিক ঐক্য শাপলা প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছিল। তখন কোনও আলোচনা ছিল না। এখন কেন এত আলোচনা বুঝলাম না।’

নির্বাচনি বিধি সংশোধন করে এনসিপির জন্য শাপলা প্রতীক চেয়ে গতকাল বুধবার দেওয়া চিঠি প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ‘এটা আমাদের কমিশনে আলোচনা করে করণীয় নির্ধারণে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখন কোনও সিদ্ধান্ত নেইনি। আমরা কমিশন সভায় বসে আলোচনা করে যা করার করবো।’

এনসিপি শাপলা পাচ্ছে কি-না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘এটাও কমিশনের সিদ্ধান্ত। সব সিদ্ধান্তের যদি আমরা কারণ ব্যাখ্যা করতে চাই, তাহলে তো কাজ করা মুশকিল।’

ইসি সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসবেন কি-না এবং জাতীয় পার্টি সংলাপে থাকবে কি-না- জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘সেটা সময় আসুক। আমরা শুরু তো করি নাই। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একটু পরে বসব আমরা। সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখন সিভিল সোসাইটি, ওমেন রিপ্রেজেন্টেটিভ, অ্যাকাডেমিশিয়ানস, মিডিয়া পার্সোনালিটিসদের সঙ্গে আগে আমরা বসব। শেষের দিকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমরা সংলাপে যাব। রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে। দেখি না কোন পর্যায়ে আসে একটু অপেক্ষা করুন দেখবেন।’

আগামী নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে ভোট হবে কি-না জানতে চাইলে সিইসি এ এম এম নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘পিআর তো আরপিও তে নেই। আইন না বদলালে তো আমি এটা করতে পারি না।’

প্রবাসীদের ভোটাধিকার বাস্তবায়নে কানাডার সফর শেষে গত ১৮ সেপ্টেম্বর দেশে ফেরেন সিইসি। এই প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ‘কানাডা গিয়ে দেখলাম প্রবাসীদের বোঝার ও জানার মধ্যে অনেক গ্যাপ আছে। প্রবাসী ভোটের সিস্টেমটা মাত্র শুরু করলাম। ইসির প্রতি যে আস্থা সেটা আগে রিস্টোর করা দরকার। যে অনাস্থা আছে সেটা ফিরিয়ে আনা দরকার। আইটি সাপোর্টের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে প্রবাসীদের ভোট নেওয়া হবে।’

মিডল ইস্টে ইসি যাচ্ছে না এমন প্রশ্নের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সৌদি, কাতার, যেয়ে প্রবাসীদের এক করে আলাপ করে পাওয়া যায় না। অ্যাম্বাসিতে তাদের ডেকে এনে কানাডার মতো সচেতনতা সৃষ্টি সহজ নয়। ওয়েস্টার্ন কান্ট্রিগুলোতে আমরা সফলতা অর্জন করবো। কাজটা সহজভাবে রেজিস্ট্রেশন করার বিষয়ে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেবো।’