বিজ্ঞাপন খাতে বকেয়া পরিশোধে কাজ করছে সরকার: তথ্য উপদেষ্টা


তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ প্রণয়নে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা সম্ভব হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বিজ্ঞাপন খাতে বকেয়া পরিশোধে সরকার কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার তথ্য ভবনে ‘সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড গঠন এবং সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ (খসড়া)’ বিষয়ক আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করা হচ্ছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, প্রস্তাবিত এই অধ্যাদেশ চূড়ান্তকরণের আগে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত নেওয়া প্রয়োজন। তিনি আগামী দশ দিনের মধ্যে এই বিষয়ে লিখিত মতামত ও প্রস্তাব দেওয়ার জন্য সাংবাদিক সংগঠন ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, মজুরি বোর্ড বাস্তবায়নের সঙ্গে একাধিক মন্ত্রণালয় জড়িত। মজুরি বোর্ড বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেগুলো সমাধানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কাজ করছে। মজুরি বোর্ড বাস্তবায়নে করণীয় বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।
মাহফুজ আলম বলেন, সংবাদপত্রের প্রচার সংখ্যায় যে অসংগতি রয়েছে, তা দূর করতে হবে। সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনের হার বাড়ানো হবে। বিজ্ঞাপন খাতে বকেয়া টাকা পরিশোধে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, বিগত সরকারের আমলে গণমাধ্যমের বিজ্ঞাপন খাতে বকেয়া টাকার পরিমাণ ছিল ৭৫ কোটি। বর্তমানে বকেয়ার পরিমাণ ৩৬ কোটি টাকা। বিজ্ঞাপন খাতের এই বকেয়া টাকা পরিশোধে মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
সাংবাদিকদের বেতন বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের ভালো বেতন নিশ্চিত করতে পারলে গণমাধ্যমে বিদ্যমান অনেক সমস্যা কেটে যাবে। তিনি সাংবাদিকদের বেতন যৌক্তিক পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে সাংবাদিক নেতারা বলেন, বিদ্যমান আইনে সাংবাদিকদের শ্রমিক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সাংবাদিকরা আর শ্রমিক হিসেবে থাকতে চান না। সাংবাদিকদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর কর্তৃত্ব একাধিক মন্ত্রণালয়ে না রেখে শুধু তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে রাখার পক্ষে মত দেন তারা।
আলোচনা সভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, প্রধান তথ্য অফিসার মো. নিজামূল কবীর, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালক খালেদা বেগম, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।