প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীদের নিরাপত্তা নিয়ে যা জানালো অন্তর্বর্তী সরকার


বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্টির (এনসিপি) নেতা আখতার হোসেন ও তাসনিম জারার ওপর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলার ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সহযোগী ও সমর্থকরা এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ আছে বলে জানায় সরকার।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই নিন্দনীয় কর্মকাণ্ড শেখ হাসিনার শাসনামলে বিকশিত হওয়া বিষাক্ত ও সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি স্পষ্ট ও বেদনাদায়ক স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দেয়। একটি শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই সংস্কৃতি ভেঙে ফেলতে দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক নেতাদের সফরের সময় সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকির পূর্বাভাসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বেশ কয়েকটি সতর্কতামূলক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয় করেছিল। জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর, প্রতিনিধি দলটির প্রাথমিকভাবে একটি মনোনীত ভিভিআইপি গেটের মাধ্যমে যাতায়াত নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং একটি বিশেষভাবে সুরক্ষিত পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে অপ্রত্যাশিত ও শেষ মুহূর্তের ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে প্রতিনিধি দলটিকে বিকল্প গেট দিয়ে বেরিয়ে যেতে হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক নেতাদের জন্য ভিভিআইপিদের প্রবেশাধিকার এবং নিরাপত্তা সুবিধার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা সত্ত্বেও, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দুঃখজনকভাবে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। এই ত্রুটি অজান্তেই প্রতিনিধি দলের সদস্যদের ঝুঁকির মুখোমুখি করেছিল। ঘটনার পরপরই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে দ্রুত ও আইনি প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমাদের জানানো হয়েছে যে, ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বর্তমানে বিষয়টির আনুষ্ঠানিক তদন্ত চলছে।
এতে আরও বলা হয়, এই ঘটনার ফলে প্রধান উপদেষ্টা ও সরকারি প্রতিনিধি দলের সব সদস্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে জোরদার করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিদেশে তার প্রতিনিধিদের সুরক্ষা এবং মর্যাদা নিশ্চিত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এবং স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এবং অবিচ্ছিন্ন সমন্বয় বজায় রেখেছে।
দেশে ও আন্তর্জাতিক স্তরে গণতান্ত্রিক নীতি এবং আইনের শাসন সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে আমরা আমাদের অবিচল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি। রাজনৈতিক সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনের কর্মকাণ্ড তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে হোক বা এর সীমানার বাইরেও সহ্য করা হবে না এবং যথাযথ আইনি ও কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া দেওয়া হবে।