আপাতত হচ্ছে না জুলাই শহীদ পরিবারের আবাসন প্রকল্প


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের পরিবারের জন্য স্থায়ী আবাসন ‘৩৬ জুলাই’ প্রকল্পটি আপাতত হচ্ছে না। আরও সমন্বিত করে প্রকল্পটি পরে বাস্তবায়ন করা হবে। বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয়েও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
রোববার রাজধানীর শেরে বাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রকল্পটির দাপ্তরিক নাম দেওয়া হয় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন–২৪ এ শহীদ পরিবারের স্থায়ী বাসস্থান প্রদানের নিমিত্ত জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জমিতে ‘৩৬ জুলাই’ আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’।
রোববার একনেক বৈঠকে যে ১৩টি প্রকল্প উত্থাপন করা হয়, তার মধ্যে ‘৩৬ জুলাই’ প্রকল্পটি ছিল তালিকার প্রথমে। তবে প্রকল্পের অস্বাভাবিক ব্যয় প্রস্তাব এবং জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের এখতিয়ার বহির্ভূত কিনা, এ নিয়ে আলোচনা হয়।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, প্রকল্পটি একটি ভালো উদ্যোগ ছিল। তবে টেন্ডারের আগেই খরচের যথাযথ মূল্যায়ন হওয়া উচিত। এছাড়া জুলাই শহীদ পরিবার এবং আহতদের বিভিন্ন সহায়তা আছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। এগুলোকে এক জায়গায় এনে সমন্বয় করা হবে। আন্দোলনে সারাদেশেই হতাহত হয়েছে। সেখানে আলাদা করে শুধু রাজধানীর মিরপুরে কেন হবে, গ্রামে কেন হবে না– এগুলো নিয়ে আলোচনা হয় একনেক বৈঠকে। সব কিছু বিবেচনায় প্রকল্পটির দায়িত্ব এখন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়েছে।
জুলাই–আগস্ট শহীদ পরিবারের জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ‘৩৬ জুলাই’ নামে এই আবাসন প্রকল্প গ্রহণ করে। বিনামূল্যে ৮ শতাধিক ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়ার উদ্যোগ নেয় সরকার। ব্যয় ধরা হয় ৭৬১ কোটি ১৬ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু যথাযথ নিয়ম-কানুন না মেনেই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি প্রকল্পের বিভিন্ন ব্যয়ের ক্ষেত্রেও অস্বাভাবিক দর প্রস্তাব করা হয়েছে।
একনেক বৈঠকে অন্যান্য উপদেষ্টা এবং সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ১২টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। এসব প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৮ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ৮ হাজার ৫৯ কোটি টাকা। বাকি ১৪৩ কোটি টাকা বিদেশি ঋণ।