বিক্ষোভের মুখে পূর্ব তিমুরে আজীবন পেনশন বাতিল


দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে একটিতে বিলাসবহুল সুযোগ-সুবিধার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বিক্ষোভের পর শুক্রবার পূর্ব তিমুরে সংসদ সদস্য এবং সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য আজীবন পেনশন আইন বাতিলের পক্ষে ভোট দিয়েছে।
দিলি থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।
২০০৬ সালে পাস হওয়া একটি আইনের অধীনে সাবেক এমপি এবং কিছু সরকারি কর্মকর্তা তাদের বেতনের সমতুল্য পেনশন পেতেন।
কিন্তু শুক্রবার সংসদের ৬২ জন সদস্য সর্বসম্মতিক্রমে একটি নতুন আইন পাসের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, যা সংসদ সদস্য, সাবেক প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার সদস্যদের আজীবন পেনশন বাতিল করে দেন।
ভোটের পর খুন্তো দলের এমপি ওলিন্ডা গুতেরেস বলেছেন, ‘সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলছি, আপনাদের দাবি পূরণ করা হয়েছে। দয়া করে এবার বিক্ষোভ বন্ধ করুন’।
গত সপ্তাহে আজীবন পেনশন সুবিধা বাতিলের দাবিতে রাজধানী দিলিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী সংসদের আইন প্রণেতাদের জন্য ৪২ লক্ষ মার্কিন ডলারের এসইউভি কেনার পরিকল্পনা বাতিলের দাবি জানায়।
পরবর্তীতে বিক্ষোভ আরো বিস্তৃত হয়ে সাবেক এমপি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের আজীবন পেনশনসহ অন্যান্য বিষয়গুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফরচুনাটা আলভেস (২৩) এএফপি’কে বলেছেন, ‘আমাদের লড়াই নিরর্থক নয়; আমরা এটাই চাই। এখন যেহেতু সংসদ একটি ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাই কৃষি, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার মতো উৎপাদনশীল খাতের জন্য তহবিল বরাদ্দ করা যেতে পারে’।
আইনটি কার্যকর হওয়ার আগে স্বাক্ষরের জন্য প্রেসিডেন্ট হোসে রামোস হোর্তার কাছে পাঠানো হবে।
দেশের ৬৫ জন সংসদ সদস্যের প্রত্যেকের জন্য টয়োটা প্রাডো এসইউভি কেনার জন্য গত বছর অনুমোদিত বাজেট আইটেমটি নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল।
বিশ্বব্যাংকের মতে, এই পরিকল্পনাটি এমন একটি দেশে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে যেখানে ৪০ শতাংশেরও বেশি জনসংখ্যা দারিদ্র্যর মধ্যে বসবাস করে।
গত সপ্তাহে টানা দুই দিন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী সমাবেশ করে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়ে মারে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে পাল্টা জবাব দেয়।
সংসদ অবশেষে জনসাধারণের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে এবং ‘২০২৫ সালের বাজেটে তালিকাভুক্ত নতুন যানবাহন ক্রয় প্রক্রিয়া বাতিল করার’ জন্য সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়।
দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে দখলদারিত্বের পর ২০০২ সালে ইন্দোনেশিয়া থেকে স্বাধীনতা লাভকারী পূর্ব তিমুর এখনো উচ্চ বৈষম্য, অপুষ্টি এবং বেকারত্বের সাথে লড়াই করছে।
এর অর্থনীতি এখনো তেলের মজুদের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।