বছরের সাত দিন চলে গেলেও বই পায়নি শিক্ষার্থীরা

Bangla Post Desk
ইউএনবি
প্রকাশিত:০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:২৪ পিএম
বছরের সাত দিন চলে গেলেও বই পায়নি শিক্ষার্থীরা

ফেনীতে নতুন বছরের সাত দিন অতিবাহিত হলেও নতুন বই পায়নি ছয় উপজেলার প্রাক-প্রাথমিক, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। তবে প্রাথমিকের সব বই পেয়েছে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।

এদিকে জেলায় প্রাথমিকের ৫০ শতাংশ বই এলেও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য বই এসেছে মাত্র ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। অপরদিকে মাদরাসা ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা এখনও বই হাতে পায়নি। মাধ্যমিকে জেলার ৩৭ লাখ বইয়ের চাহিদা থাকলেও এখনও বই আসেনি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিকে জেলায় মোট বরাদ্দকৃত বইয়ের সংখ্যা ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৬টি। তারমধ্যে এখন পর্যন্ত প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শতভাগ বই এসেছে।

এ ছাড়া প্রাক-প্রাথমিক, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির চাহিদার ৩ লাখ ১৬১টি বইয়ের একটিও এখনও আসেনি বলে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানায়।

জেলা শিক্ষা অফিসার কার্যালয় সূত্র জানায়, ফেনীতে মাধ্যমিক ও মাদরাসায় মোট শিক্ষার্থী তিন লাখ ৬৬ হাজার ৮৭৮ জন। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে বইয়ের মোট চাহিদা ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ৭৭৬টি।

৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলায় বই এসেছে ৭৯ হাজার ৩০৪টি। বিগত বছরের শেষ দিন পর্যন্ত ফেনী সদর উপজেলায় মাধ্যমিকে নবম শ্রেণির ৩টি বিষয়ের ৩৪ হাজার ৫০০টি বই ও মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ১২ হাজার ৯০০টি বই এসেছে। এছাড়া সোনাগাজী উপজেলায় মাধ্যমিকে নবম, দশম শ্রেণির দুইটি বিষয়ে (বাংলা, গণিত) ২৫ হাজার ৮০০টি বই ও মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির তিনটি বিষয়ে (বাংলা, গণিত, ইংরেজি) ৮ হাজার ৪০০টি বই এসেছে।

বই না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে ফেনী সদর উপজেলার গোয়াডুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শারমিন আক্তারের। সে জানায়, বছরের প্রথম দিন বিদ্যালয়ে এসেছি। অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বই পেলেও আমরা বই পায়নি। পরে বই দেবে বলে শিক্ষক জানিয়েছেন।

দাগনভূঞা উপজেলার লালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র অনিন্দ্র দে জানান, প্রতিবার বই উৎসব হত, এবার তাও হয়নি। নতুন বইও পাইনি। বই কবে দেবে তাও ঠিক জানাতে পারেননি শিক্ষকরা।

ফেনী শিশু নিকেতন কালেক্টর স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রের অভিভাবক জাফর আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, নতুন বই পাবে না জেনে ছেলে স্কুলে যায়নি। সরকার আন্তরিক হলে শিক্ষার্থীরা বছরের শুরুতেই বই পেত।

নতুন শিক্ষাবর্ষে দেরিতে বই পাওয়া নিয়ে অভিভাবকরা শঙ্কা প্রকাশ করলেও কর্তৃপক্ষ বলছে, চলতি মাসেই শিক্ষার্থীদের হাতে উঠবে নতুন বই।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শতভাগ বই বিতরণ শেষ হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই হাতে পেলেই বিতরণ করা হবে।’

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফী উল্লাহ বলেন, ‘নতুন বছরে আগের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে বই উৎসব হয়নি। মুদ্রণ জটিলতায় ও কিছু পরিবর্তনের কারণে ফেনী সদর ও সোনাগাজী উপজেলায় কিছু বই এসেছে।

এছাড়া জেলায় চাহিদার সব বই আসতে আরও প্রায় ১৫ থেকে ২০ দিনের মতো লাগতে পারে বলে জানান জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফী উল্লাহ।