প্রাথমিকের শিক্ষকদের আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার

Bangla Post Desk
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:২০ পিএম
প্রাথমিকের শিক্ষকদের আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার
সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি। ছবি- বাংলা পোস্ট

বেতন কাঠামোর ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাসে সব ধরনের আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।

সোমবার (১০ নভেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানার সঙ্গে বৈঠকের পর শিক্ষক নেতারা কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের দাবি দশম গ্রেড হলেও অর্থ মন্ত্রণালয় আমাদের জন্য ১১তম বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। তাদের প্রতি আস্থা রেখে আমরা আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকে আমাদের সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।

সহকারী শিক্ষকরা বর্তমানে ১৩তম গ্রেডে বেতন পেয়ে থাকেন। দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ে টানা তৃতীয় দিনের মতো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। একই সঙ্গে সারাদেশের সব বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি চলছে। 

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের ব্যানারে প্রাথমিক শিক্ষকদের চারটি সংগঠন একসঙ্গে এ কর্মসূচি পালন করছে।

দশম গ্রেড বাস্তবায়নসহ তিন দফা দাবিতে গত ৮ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে। ওই দিন কর্মসূচিতে পুলিশি হামলার পর রোববার (৯ নভেম্বর) থেকে সারা দেশে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেন শিক্ষকরা। একসঙ্গে চলতে থাকে ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি।

এরই মধ্যে সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে উন্নীত করার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়।

হুইল চেয়ারে করে আসা পুলিশের হামলায় আহত খায়রুন নাহার লিপি বলেন, ‘আপনারা জানেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকরা নিপীড়িত নিষ্পেষিত এবং যুগের পর যুগ বৈষম্যের যাঁতাকলে পিষ্ঠ। রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করা কিংবা সরকার বিরোধী কোন আন্দোলন হিসেবে আমরা শহীদ মিনারে আসিনি। আমরা নিজেদের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে জন্য নিজেদের অভিব্যক্তিগুলো সমস্বরে উচ্চারণ করার জন্য দাঁড়িয়েছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আজকে দীর্ঘ সময় আলোচনা করেছি, আমাদের শিক্ষকদের প্রাণের দাবি দশম গ্রেড। দশম গ্রেডের দাবি চলমান থাকবে। এ দাবি থেকে আমরা সরবো না। প্রধান শিক্ষকরা যেহেতু দশম গ্রেড পেয়েছে তাই অর্থ মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সহকারী শিক্ষকদের জন্য ১১তম গ্রেড যুক্তিযুক্ত মনে করে। আমরা মনে করি এটিও সহকারী শিক্ষকদের একটি যুগান্তকারী অর্জন’।

‘অর্থ মন্ত্রণালয় একটি লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে আমাদের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। ১১তম গ্রেডের জন্য তারা প্রস্তাব পে-কমিশনে পাঠিয়েছেন। পে কমিশন থেকে দ্রুততম সময় তা অর্থ মন্ত্রণালয় পাঠাবে। যত দ্রুত সম্ভব সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে উন্নত করবেন বলে আমাদের প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। এটাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অনেক বড় বিজয়।’

খায়রুন নাহার লিপি আরও বলেন, ‘আমরা আগামীকাল থেকে আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা জাতীয় শহীদ মিনারে গিয়েও আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেব। আমরা আগামীকালকে থেকেই ক্লাসে ফিরে যাব।’

তবে খায়রুন নাহার লিপি কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও তার এই ঘোষণা নিয়ে অন্যান্য নেতাদের মধ্যে দ্বিমত দেখা যায়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে যেতে নেতাদের মধ্যে বাক-বিতণ্ডাও হয়।