শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ সভ্য সমাজে কোনোভাবে কাম্য নয় : বুয়েট ভিসি

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট ডেস্ক
প্রকাশিত:২৭ আগস্ট ২০২৫, ০৮:০১ পিএম
শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ সভ্য সমাজে কোনোভাবে কাম্য নয় : বুয়েট ভিসি
ছবি : সংগৃহীত

আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জের ঘটনাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ উল্লেখ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভিসি অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান।

তিনি বলেছেন, শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ সভ্য সমাজে কোনোভাবে কাম্য নয়। অথচ আজ প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা দাবি জানাতে যমুনায় (প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন) যাওয়ার সময় পুলিশ নির্মমভাবে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে। যা কোনোভাবেই গ্রহণ যোগ্য নয়।

বুধবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় শাহবাগ মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানাতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

এদিন দুপুর দেড়টার পর তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টাকালে আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান নিক্ষেপ করে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।

বুয়েট ভিসি বলেন, চলমান আন্দোলনের দাবিদাওয়া নিয়ে বুয়েটসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যমুনার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলো। তখন পুলিশ তাদের ওপর নির্মমভাবে লাঠিচার্জ করেছে। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা মনে করি, পুলিশের এমন আচারণ সভ্য সমাজে কোনোভাবে কাম্য নয়। তাই আমাদের দাবি, জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি বলেন, পুলিশের টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেটে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের বুয়েটের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এখনো অনেকে ঢাকা মেডিকেলসহ অন্যান্য হাসপালে ভর্তি আছেন। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবো।

ভিসি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সুষ্ঠু ব্যবস্থা নিতে আমি ও প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরসহ শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করি। দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরি। তাদের অনুরোধ করি দায়িত্ব নিয়ে উপদেষ্টাদের সঙ্গে বসে কমিটি গঠন করেন এবং বিষয়টির সমাধান করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে একটি কমিটি গঠন করা হয়।

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘কমিটি মানি না’ ও ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেন। ভিসি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, কমিটির বিষয়ে যদি কারও কোনো বক্তব্য থাকে বলেন। আমরা কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করবো। শিক্ষার্থীরা তখন বলেন, গঠিত কমিটিকে তাদের এখানে আসতে হবে।

এদিকে, সংকট সমাধানে সরকারের গঠন করা কমিটি প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়ে তিন দফা দাবি থেকে সরে এসে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা। বিকেলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

এদিন পূর্বঘোষিত ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা ১১টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শাহবাগের মূল সড়কে অবস্থান নেন। এতে শাহবাগ ও আশপাশের সব সড়ক অচল হয়ে পড়ে। দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা যমুনা অভিমুখে অগ্রসর হলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন।