চলতি সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম না কমলে আমদানি: বাণিজ্য উপদেষ্টা

Bangla Post Desk
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক 
প্রকাশিত:০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:২৯ পিএম
চলতি সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম না কমলে আমদানি: বাণিজ্য উপদেষ্টা
ছবি- সংগৃহীত

চলতি সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজের দাম কমে কাঙ্খিত পর্যায়ে নেমে না আসলে আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

রোববার (৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এ কথা জানান।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, 'নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে পেঁয়াজের দাম ৩৫-৪০ টাকায় নেমে এসেছিল, সেটা আমাদের কৃষকদের জন্য উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। বহুদিন পেঁয়াজের দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকার মধ্যে স্থির ছিল। আমরা গত এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন যাবত দেখছি পেঁয়াজের মূল্যের একটা উর্ধ্বগতি হয়েছে।'

পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা মনে করি পেঁয়াজের কোন সংকট নেই। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে পেঁয়াজ সংরক্ষণকে সুবিধাজনক করার জন্য ১০ হাজার হাই ফ্লো মেশিন বিতরণ করেছে। ফলে পেঁয়াজের সংরক্ষণ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটেছে।' 

'সর্বোচ্চ গত দুই সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজের দামের উস্ফালন ঘটেছে। আমরা জিনিসটার ওপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছি। বাণিজ্য সচিব নিজে এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।'

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘আমরা জানি অনেকেই পেঁয়াজ আমদানির জন্য আবেদন করেছেন। আমাদের কাছে বর্তমানে ২ হাজার ৮০০-এর মত পেঁয়াজ আমদানির আবেদন আছে।'

তিনি বলেন, 'আমরা বাজারের ওপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছি। চলতি সপ্তাহের মধ্যে যদি পেঁয়াজের দাম প্রয়োজন অনুযায়ী না কমে আমরা আমদানি অনুমোদন ইস্যু করে দেব। দাম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে আমরা পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেব না।'
 
একাধিক কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, 'মৌসুমের শেষ সময়, শুকিয়ে পেঁয়াজের ওজনও কমে গেছে, হাইফ্লো মেশিন দিয়ে যারা পেঁয়াজ সংরক্ষণ করেছেন তাদেরও ব্যয় রয়েছে।'

উপদেষ্টা আরও বলেন, 'আমাদের কাছে যে পেঁয়াজ আমদানির আবেদন আছে, এর দশ শতাংশ যদি আমরা ছেড়ে দেই। স্থল বন্দরের ওপাশে অনেক পেঁয়াজ মজুদ করা হয়েছে। আমরা যদি আমদানির অনুমতি দেই, তবে স্বাভাবিকভাবে বাজারে ধ্বস নামবে। আমরা ধ্বস নামাতে চাই না। আমরা চাই একটা স্বাভাবিক মূল্য পরিস্থিতি বিরাজ করুক। এতে আমরা আমাদের নিজস্ব কৃষি সম্ভবনাকে কাজে লাগাতে পারব। কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। একইভাবে ভোক্তারা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।'

সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর কোন তথ্য উপদেষ্টার কাছে নেই  জানিয়ে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা আমাদেরকে জানান যে এই জায়গায় এভাবে সিন্ডিকেশনটা হচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, 'সামগ্রিক অর্থনীতির বিষয়টি মাথায় রেখে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এটি কোন সাইকেল নয় যে আমরা যে কোনো একটা গলিতে ঢুকিয়ে দিলাম।'

কয়েক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৪০-৫০ টাকা বেড়ে যাওয়াকে যৌক্তিক মনে করেন কিনা জানতে চাইলে বশিরউদ্দীন বলেন, অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত নয়। এমন কোন বিশেষ ঘটনা ঘটেনি।

এই মুহূর্তে কৃষকের কাছে পেঁয়াজ নেই এবং এ বাড়তি মূল্যের টাকা কৃষকের পকেটে যায়নি বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। 

বাণিজ্য সচিব বলেন, 'কৃষি সচিব আমাকে যে তথ্য দিয়েছেন সেই অনুযায়ী সাড়ে তিন লাখ টনের মত পেঁয়াজ আমাদের আছে। এ মাসের মধ্যে আসবে ৮৫ থেকে ৮৭ হাজার মেট্রিক টন এবং আগামী মাসে আসবে আড়াই লাখ মেট্রিক টন। এরপর রেগুলার পেঁয়াজ বাজারে আসবে। আমাদের পেঁয়াজের কোন সংকট নেই।'