1. হোম
  2. সারাদেশ

বাবার কবরের পাশে সমাহিত হওয়ার ইচ্ছে ছিল হাদির, জানাল পরিবার

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২৮ পিএম
বাবার কবরের পাশে সমাহিত হওয়ার ইচ্ছে ছিল হাদির, জানাল পরিবার
সৈয়দ শরীফ ওসমান হাদি

ঘাতকের গুলিতে নিহত ইনকিলাব মঞ্চের নেতা সৈয়দ শরীফ ওসমান হাদিকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার খাসমহল পৌর এলাকা। হাদিশূন্য তার বসতভিটায় ভিড় করছেন চেনা-অচেনা অসংখ্য মানুষ। একইসঙ্গে শোকের মাতম চলছে শ্বশুরবাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জেও। শেষবারের মতো প্রিয় মানুষটিকে দেখার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন গ্রামবাসী ও স্বজনরা।

পরিবারের সদস্যরা জানান, হাদির ইচ্ছা ছিল তাকে যেন তার বাবার কবরের পাশেই দাফন করা হয়। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি। নিহত হাদির ভগ্নপতি আমীর হোসেন কে জানান, হাদির ইচ্ছে ছিল তাকে তার বাবার পাশে সমাহিত করার।

টিনশেড ঘরেই জন্ম ও বেড়ে ওঠা সৈয়দ শরীফ ওসমান হাদির। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হাদি আজ যেন নিজের ঘরেই কেবল একটি ছবিতে সীমাবদ্ধ। ঘাতকের গুলিতে চিরতরে বিদায় নেওয়ায় শূন্যতায় ছেয়ে গেছে তার জন্মভূমি।

১৯৯৩ সালে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার খাসমহল পৌর এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন ওসমান হাদি। বাবা মাওলানা আবদুল হাদি ও মা তাসলিমা হাদির ছয় সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট।

এলাকাবাসী জানান, শৈশব থেকেই হাদি ছিলেন প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর। নেছারাবাদ এন এস কামিল মাদরাসা থেকে দাখিল ও আলিম সম্পন্ন করে তিনি পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। স্বজনদের কাছে যেমন, তেমনি গ্রামবাসীর কাছেও হাদি কেবল একটি নাম নয়, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক প্রতীক। তাই তার মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না এলাকাবাসী। কেউ অঝোরে কাঁদছেন, কেউ নীরবে চোখের জল ফেলছেন।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই হাদির ভাঙাচুরা বসতঘরের সামনে ভিড় করেন অসংখ্য মানুষ। বাড়িতে থাকা হাদির বোন ও তার পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলছেন আগতরা। কেউ স্মৃতিচারণ করছেন, কেউ আবার হাদি হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করছেন।

এদিকে, হাদির শ্বশুরবাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জেও চলছে শোকের মাতম। অল্প বয়সে স্বামীহারা স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় স্বজনরা। তাদের দাবি, হাদির মতো আর যেন কোনো মায়ের কোল খালি না হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনে নির্বাচনি প্রচারণার সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে মাথায় গুরুতর আঘাত পান ওসমান হাদি। ঢাকা মেডিকেল ও এভারকেয়ার হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

বিপি/আইএইচ