কক্সবাজারে ডিসি গোল্ডকাপ ফুটবল ফাইনাল খেলা পণ্ড, ইউএনওসহ আহত ২০

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:১৪ পিএম
কক্সবাজারে ডিসি গোল্ডকাপ ফুটবল ফাইনাল খেলা পণ্ড, ইউএনওসহ আহত ২০

কক্সবাজারের বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে আজ শুক্রবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল টেকনাফ ও রামু উপজেলা একাদশের মধ্যে ‘ডিসি গোল্ডকাপ ফুটবলের’ ফাইনাল খেলা। তবে খেলা শুরু হওয়ার আগেই দর্শকদের ভাঙচুরের ঘটনায় তা পণ্ড হয়ে যায়। এসময় কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমরান হোসাইন সজীব সমকালকে বলেন, ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত দর্শক উপস্থিত হওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। স্টেডিয়ামে যারা ভাঙচুর চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ইমরান হোসাইন সজীব সমকালকে বলেন, দর্শকদের অতিরিক্ত চাপে সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনায় খেলা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।

দর্শকদের অভিযোগ, ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত ৬ গুণ টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। আর ওই সময় টিকিট বিক্রি হয়েছে অতিরিক্ত মূল্যে। আর এসব দর্শকদের বসার স্থান না থাকায় বিশৃঙ্খলার সূত্রপাত ঘটে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ছিল শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর)। রামু ও টেকনাফ উপজেলা একাদশের মধ্যে দুপুর ৩টায় ফাইনাল ম্যাচটি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ৭টা থেকে স্টেডিয়ামে গিয়ে টিকিট সংগ্রহ শুরু করেন দর্শকরা। এ টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারিত থাকলেও দর্শকের উপস্থিতি ক্রমাগত বাড়তে থাকে। 

দুপুর ২টা পর্যন্ত আয়োজক কমিটি অতিরিক্ত মূল্যে ধারণ ক্ষমতার ৬ গুণ টিকিট বিক্রি করে।

দর্শকরা জানিয়েছেন, ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে এক একটি টিকিট। স্টেডিয়ামটির ধারণ ক্ষমতা ৫ হাজার হলেও ৩০ হাজার টিকিট বিক্রি করা হয়। এতে অতিরিক্ত দর্শক গ্যালারিতে বসার স্থান না পেয়ে গেট ভেঙে আড়াইটার দিকে পুরো মাঠ দখল করে নেন। ফলে মাঠে খেলা পরিচালনার সুযোগ না হওয়ায় আয়োজকসহ পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। কিন্তু নানা চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।

এর মধ্যে স্টেডিয়ামে প্রবেশে ব্যর্থ দর্শকরা স্টেডিয়ামের বাইরে থেকে ভবনে ভাঙচুর শুরু করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এর মধ্যে বিকেল সোয়া ৫টার দিকে মাঠ থাকা দর্শকদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ করে বের করে দিতে সক্ষম হয়। এরপর মাঠে খেলা পরিচালনার প্রস্তুতি নিলেও গ্যালারিতে দর্শক ও বাইরের দর্শকরা একযোগে হামলা করে গ্যালারি, মাঠ, প্রেসবক্সসহ সবকিছু ভাঙচুর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এতে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

যার মধ্যে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ১৫ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস খান বলেন, পুলিশ, র‍্যাব, সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের প্রচেষ্টায় সন্ধ্যার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। সংশ্লিষ্ট সবার সাথে কথা বলে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।