ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ আমান উল্লাহকে ওএসডি


ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমান উল্লাহকে ওএসডি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের (সরকারি কলেজ-২) উপসচিব মো. আব্দুল কুদদুস সই করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাকে ওএসডি করা হয়েছে।
রোববার (৩ আগস্ট) বিষয়টি জানাজানি হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আমান উল্লাহর বদলিকৃত কর্মস্থল মাউশি অধিদপ্তর। আমান উল্লাহ কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহা. সাকির হোসেনের কাছে পদের দায়িত্বভার হস্তান্তরপূর্বক ৩ আগস্ট অপরাহ্ণের আগে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন। অন্যথায় একই তারিখ অপরাহ্ণে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত বলে গণ্য হবে। জনস্বার্থে এই আদেশ জারি করা হয়েছে।
জানা যায়, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই অধ্যক্ষ আমান উল্লাহর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ কলেজ ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ ওঠে। আমান উল্লাহর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ নিয়ে বিএনপিপন্থি শিক্ষকসহ অনেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। বলা হচ্ছিল, তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থক ও বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের প্রভাবশালী নেতা।
কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তার অপসারণের দাবি জানিয়ে বেশ কয়েকবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। গত ২৫ মে দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে আনন্দ মোহন কলেজের সাধারণ ছাত্রদের ব্যানারে অধ্যক্ষ মো. আমান উল্লাহর অপসরণের দাবিতে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করা হয়। এতে কলেজের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
উপাধ্যক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পেয়েছেন অধ্যাপক মোহা. সাকির হোসেনউপাধ্যক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পেয়েছেন অধ্যাপক মোহা. সাকির হোসেন
মানববন্ধনে তারা অভিযোগ করে বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, জুলাই বিপ্লবের বিরোধিতাকারী, আওয়ামী লীগের দোসর অধ্যক্ষ মো. আমান উল্লাহ। তাকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ হিসেবে আনন্দ মোহন কলেজে দেখতে চান না।
মানববন্ধনে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা রাজপথে রক্ত দেওয়ার সময় অধ্যক্ষ আমান উল্লাহ ছাত্রলীগের প্রশংসায় মুখরিত ছিলেন।
এর আগে ২০২১ সালের ৮ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে রাষ্ট্রপতির আদেশে উপসচিব ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ সই করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অধ্যক্ষ হিসেবে অধ্যাপক মো. আমান উল্লাহকে পদায়ন হয়েছিল। তিনি একই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপনা করে আসছিলেন।
উপাধ্যক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দ্বায়িত্ব পাওয়া অধ্যাপক মোহা. সাকির হোসেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।