৯২ দিন পর কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার শুরু


শনিবার মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে শুরু হয়েছে মৎস্য আহরণ। এদিকে, মাছ আহরণের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর শুধু জেলেপাড়ায় নয়, কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে জেলার সব থেকে বড় মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) ঘাটে। মাছ পরিবহনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন।
দীর্ঘ ৯২ দিনের কর্মহীন জীবনের অবসান ঘটাতে প্রহর গুনছেন জেলেরা। একইসঙ্গে সকল প্রস্তুতি সেরেছেন ব্যবসায়ীরা।
বিএফডিসি সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য গত ১ মে থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এই সময়ে হ্রদে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন কার্পজাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় ২৬ হাজার জেলে।
রাঙামাটি শহরের পুরানপাড়া জেলেপল্লির বাসিন্দা সজল দাস বলেন, ‘সরকারি যে সহায়তা পাওয়া যায় তাতে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। কারণ, বন্ধকালীন পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটে। দীর্ঘ তিন মাস পর মাছ ধরতে নামতে পারবো, এতেই খুশি আমরা।’
নতুনপাড়ার জেলে অমর কান্তি দাস বলেন, ‘লেকের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে পানিতে ঢেউ থাকায় শুরুতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে না। পানি স্থির ও কিছু কমে আসলে ভালো মাছ পাবো আশা করি। লেকে নামার যা যা প্রস্তুতি সবকিছু শেষ করেছি। জাল, নৌকা মেরামত করা হয়েছে। এখন শুধু লেকে নামার অপেক্ষা।’
রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়া বলেন, ‘এবার বন্ধের শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় মাছ প্রথম থেকেই প্রজনন এবং বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। তাই আশা করছি, এবার পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ব্যবসায়ীরা সব প্রস্ততি সেরে নিয়েছে। রবিবার সকাল থেকে বিএফডিসি ঘাটে মাছ আসতে শুরু করবে।’
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেন, ‘বন্ধকালীন আমাদের উপকেন্দ্রগুলোর যেসব অবকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব আমরা শেষ করেছি। এ ছাড়া অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেসবও শেষ হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের মতো এ বছরও ভালো মাছ পাওয়া যাবে।’