সড়কে আলু ফেলে কৃষকদের মানববন্ধন

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:৩০ জুলাই ২০২৫, ০২:২৮ পিএম
সড়কে আলু ফেলে কৃষকদের মানববন্ধন

ধান-গমের মতো র মূল্যও সরকারকে নির্ধারণ করে দেওয়ার দাবিতে সড়কে আলু ফেলে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন নওগাঁর আলু চাষিরা।

বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। নওগাঁ, বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলার কৃষক পরিবার ও আলু ব্যবসায়ী পরিবারের ব্যানারে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

কৃষকরা জানান, বাজারে আলুর দাম উৎপাদন খরচের অর্ধেকেরও নিচে। প্রতি কেজিতে ১৭-১৮ টাকা লোকসান হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করায় বাজারে দাম না পেয়ে সেই টাকা পরিশোধও করতে পারছেন না তারা। এ পরিস্থিতিতে সরকারের হস্তক্ষেপ চাইছেন চাষিরা।

নওগাঁ সদর উপজেলার কিত্তিপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, ‘সার-ফসফেটের দাম অনেক বেশি। সেই হিসেবে শুরু থেকেই এবার আলুর দাম নেই। খরচের টাকাও উঠছে না।’

তিনি প্রশ্ন তোলেন, ধান-চালের সরকারি মূল্য নির্ধারণ করা হলে আলুর কেন নয়? সরকারের কাছে দ্রুত আলুর মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

সদর উপজেলার বক্তারপুর গ্রামের আরেক কৃষক বুলবুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে ধানের দাম বেশি, চালের দামও বেশি। কিন্তু আলুর কোনো দাম নেই। হিমাগারেও অতিরিক্ত খরচ নেওয়া হচ্ছে। এক মণ আলু চাষ করতেই ১২০০-১৩০০ টাকা খরচ হয়েছে। বাজারে এখন আলু বিক্রি করতে হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা মণ। তাহলে আমরা যাব কোথায়? সরকার যদি কোনো উদ্যোগ না নেয়, তাহলে আমরা শেষ হয়ে যাব।’

হাপানিয়া এলাকার আলু চাষি সাইফুল আলম বলেন, ‘গরু বিক্রি করে, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে লাভের আশায় আলু চাষ করেছিলাম। কিন্তু বাজারে এখন আলু বিক্রি হচ্ছে না। হিমাগারে প্রতি কেজি আলুতে আগের তুলনায় ৪ টাকা করে বেশি খরচ পড়ছে। এক কেজি আলু উৎপাদন ও হিমাগারে রাখতে ২৫-২৬ টাকা খরচ হচ্ছে। অথচ বাজারে পাইকারি দরে ১১-১২ টাকার বেশি বিক্রি হচ্ছে না। ঋণের টাকা পরিশোধ করা তো দূরের কথা, খরচের টাকাই উঠছে না।’

এ বিষয়ে নওগাঁ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বিপণন কর্মকর্তা সোহাগ সরকার বলেন, ‘এ বছর ফলন ভালো হওয়ায় আলুর উৎপাদন চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি হয়েছে। বছরের এই সময়টাতে অন্যান্য সবজি বাজারে বেশি থাকায় মানুষ আলু কম কিনছে। সরকারের পক্ষ থেকে ওএমএস অথবা টিসিবির মাধ্যমে আলু বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।’