মেহেরপুরে সেনাবাহিনী মোতায়েন করায় জনমনে আতঙ্ক

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:২৭ জুলাই ২০২৫, ০৪:২৮ পিএম
মেহেরপুরে সেনাবাহিনী মোতায়েন করায় জনমনে আতঙ্ক

শুরু থেকে মেহেরপুরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চললেও ২৭ জুলাই মেহেরপুর শহরে সেনা মোতায়েন করা হয়। সেনা মোতায়েন এবং মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করে। ঢাকা থেকে আগতদের কাছে পরিস্থিতি জানার জন্য অনেকেই ভিড় করেন। ঢাকায় থাকা স্বজনদের কাছে মোবাইলে পরিস্থিতি জানতেও যোগাযোগ করেন অনেকে।

চলমান পরিস্থিতির কারণে সরকারি নির্দেশে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সরকারি- বেসরকারি অফিস খোলা রাখা হয়। আগের কয়েক দিনের তুলনায় এদিন গণপরিবহণে যাত্রীদের উপস্থিতিও বেশি দেখা যায়। আন্ত:সড়কেও বাস, ট্রাক, রিকশা, নসিমন চলাচল করে। 

কৃষি নির্ভর মেহেরপুরে বড় বড় শহরের পাইকার সবজি ক্রেতাদের উপস্থিতি কমে যাওয়াতে স্থানীয় বাজারে সবজির দাম কমে যায়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিকেল ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত কারফিউ বহাল থাকার ঘোষণা দেওয়া হয়। 

শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সামনে অবস্থান নেয় সেনা সদস্য, র‌্যাব ও পুলিশ। বিভিন্ন যানবাহন ও পথচারীদের থামিয়ে তল্লাশি করা হয়। দেশের পরিস্থিতি ভালো মনে হওয়ায় শহরে দোকানপাট খোলা ছিল চোখে পড়ার মতো। মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় টেলিভিশনে খবর দেখার জন্য বিভিন্ন চায়ের দোকানে লোকজন ভিড় জমায়।  

মেহেরপুরের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক শিক্ষক খন্দকার মুইজ উদ্দীন বলেন, চব্বিশের ২৭ জুলাই আমার প্রায় ১০০ ছাত্র-ছাত্রীকে প্রতিনিয়ত রাষ্ট্র পুনর্গঠনের জন্য বিভিন্নভাবে মোটিভেট করার চেষ্টা করি। তাদের ছোট ছোট  গ্রুপ তৈরি করে কীভাবে আন্দোলন করা যায় সেটা নিয়ে আলোচনা করি।’

তিনি বলেন, যখন পুলিশের গুলিতে ছাত্র নিহত হয়, তখনই শেখ হাসিনা সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসে থাকার সব অধিকার হারিয়ে ফেলে। তখন থেকেই দেশের সব বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপগুলোতে ঢাকা ব্লক এবং আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য লেখালেখি শুরু করি। আমার পুরোনো যেসব ছাত্র-ছাত্রী আছে তাদের সবার সাথে যোগাযোগ করে আন্দোলনে শামিল হওয়ার নির্দেশ দেই।’ 

তিনি বলেন, যেহেতু কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের ডিবি হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সুতরাং অনেকেই হতাশ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তাদের সাহস দেয়ার মাধ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেই। আমরা কয়েকজন মেহেরপুরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের একত্রিত করার পরিকল্পনা করতে থাকি। শিক্ষার্থীদের  বোঝানোর চেষ্টা করি যে, ‘এখন সরকার পরিবর্তন করা না হলে, তাহলে সামনের ১০০ বছরেও করা সম্ভব হবে না’। সরকারের দিক থেকে কারো উপর চাপ আসলে সেগুলো প্রতিহত করার কৌশল নিয়েও তাদের সাথে গভীরভাবে আলোচনা করি।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আনোয়ারুল হক কালু সেদিনের স্মৃতি স্মরণ করে বাসসকে বলেন, ‘আমাদের মনে হচ্ছিল পরিস্থিতি সরকারের বিপক্ষে চলে যাচ্ছে। যেকোনো সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি ভালো বোঝানোর চেষ্টা করছিল স্থানীয় প্রশাসন। ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছিল।’