পুলিশের ধাওয়ায় পুকুরে ডুবে শিবিরকর্মী নিহত, ওসিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে উত্তাল গাইবান্ধা

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:২৭ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪৬ পিএম
পুলিশের ধাওয়ায় পুকুরে ডুবে শিবিরকর্মী নিহত, ওসিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে উত্তাল গাইবান্ধা

গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় পুলিশের ধাওয়ায় পুকুরে ডুবে সিজু মিয়া নামে এক শিবিরকর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জনতা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাঘাটা থানা ভবনে এই ঘটনা ঘটে। এর জেরে বিক্ষোভ, মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ এবং পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাওসহ একের পর এক প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গাইবান্ধার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ‘সিজু হত্যার’ বিচার দাবিতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি স্থগিত করেন।

আজ সকালে সাঘাটার সচেতন নাগরিক সমাজের আয়োজনে বোনারপাড়া উপজেলা চত্তর এলাকায় প্রতিবাদ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন সাঘাটা ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক এনামুল হক সরকার, যুবদল নেতা ইখতিয়ার আহম্মেদ সুজন, ছাত্রশিবির থানা সভাপতি সাজেদুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন সাঘাটা থানা শাখার সেক্রেটারি সুরুজ্জান, সচেতন নাগরিক কমিটির গোলাম রাব্বি প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সিজু যদি অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে থাকে, তাহলে তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা যেত। কিন্তু পুলিশ তা না করে উল্টো তাকে পুকুরে নামার পরও নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।

ঘটনার বিবরণে স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাঘাটা থানা চত্বরে পুলিশের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগ তুলে সিজু মিয়াকে ধাওয়া দেয় পুলিশ। ধাওয়া খেয়ে সিজু থানা-সংলগ্ন পুকুরে ঝাঁপ দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সেখানে পুলিশ ও স্থানীয় কিছু ব্যক্তি পানিতে পড়ে যাওয়া সিজুকে বেধড়ক মারধর করেন। গুরুতর আঘাতে ঘটনাস্থলেই পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়। এরপর সারা রাত তাকে পানি থেকে উদ্ধার না করে সাঘাটা থানা পুলিশ শুক্রবার সকালে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের সহযোগিতায় পুকুর থেকে সিজুর লাশ উদ্ধার করে। সে সময়ও নিহত সিজু মিয়ার শরীর থেকে রক্ত ঝরছিল। খবর পেয়ে নিহতের স্বজনরা সাঘাটা থানায় পৌঁছান। এরপর সাংবাদিকদের কাছে তারা পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ তোলেন।

স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশ পরিকল্পিতভাবে সিজুকে হত্যা করেছে। এ ঘটনার পর ফুঁসে ওঠে জামায়াত-শিবির ও স্থানীয় জনগণ। তারা সিজু মিয়াকে হত্যার অভিযোগে সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলমসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান।