গোপালগঞ্জে কারফিউ ও ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার, অভিযান চলবে


গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে হামলা, সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনার পর জারি করা কারফিউ ও ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে অপরাধীদের গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
রবিবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মিডিয়া সেল থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, রবিবার রাত ৮টার পর গোপালগঞ্জ জেলায় ১৪৪ ধারা ও কারফিউ বলবৎ থাকবে না। সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনাপূর্বক পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া হবে। এ ছাড়া অপরাধীদের গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, জেলার চলমান কারফিউ ও ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়েছে।
গত ১৬ জুলাই এনসিপির সমাবেশে ও নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
এই ঘটনায় বিকালেই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। পরে রাত ৮টা থেকে গত বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার (১৮ জুলাই) বেলা ১১টা পর্যন্ত কারফিউর সময়সীমা বাড়ানো হয়। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত আবারও কারফিউ বহাল করা হয়। এরপর শনিবার রাত ৮টা থেকে রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বাড়ানো হয় কারফিউয়ের সময়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৬ জুলাই থেকে গোপালগঞ্জে বিরাজ করছে থমথমে অবস্থা, জনমনে রয়েছে আতঙ্ক। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও পড়েছে ঘটনার রেশ। রবিবার সকাল ৬টা থেকে কারফিউ না থাকলেও দোকানপাট তেমন খোলেনি, ছিল না লোকজনের আনাগোনাও। জেলার অভ্যন্তরীণ কোনও রুটেই চলেনি যানবাহন।
দূরপাল্লার কোনও যানবাহন গোপালগঞ্জ থেকে ছেড়ে যায়নি। প্রতিটি বাসের কাউন্টার বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও ছিল না শিক্ষার্থীর উপস্থিতি।
বুধবারের সংঘর্ষে ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদর, কোটালীপাড়া ও কাশিয়ানী থানায় পুলিশের কাজে বাধা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটনায় পৃথক চারটি মামালা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। মামলায় প্রায় তিন হাজারের অধিক লোককে আসামি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এ পর্যন্ত ৩২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে, বুধবারের সহিংসতার ঘটনায় পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত চার জন নিহতের ঘটনায় চারটি পৃথক মামলা করেছে পুলিশ। প্রতি মামলায় দেড় হাজার করে ৬০০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।