ভারতে অনুপ্রবেশের পর ত্রিপুরা রাজ্যে আটক এক নারীসহ ১১ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় ত্রিপুরার আগরতলা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট হয়ে তারা দেশে ফেরেন।
আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের মাধ্যমে তাদের নিজ নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রত্যাবাসনের সময় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের মানবপাচার প্রতিরোধ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের জরুরি সহায়তা হিসেবে খাবার, কাউন্সেলিং সেবা এবং যাতায়াতের খরচ হিসেবে নগদ অর্থ দেওয়া হয়।
দেশে ফেরত আসা ব্যক্তিরা হলেন— চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মো. খাবির, মো. রুহুল, মো. আশরাফুল হক, সুমন রানা, বদিরুল ইসলাম, মো. মান্নান আলী ও মো. রুহুল আমিন। এছাড়াও ফিরেছেন কুমিল্লার ফারজানা আহমেদ নিপা, বাগেরহাটের মো. হেলাল জমাদ্দার, ও রাজশাহীর মো. আকরামুল ইসলাম অনিক।
এ সময় দুইদেশের সীমান্তে আগরতলা হাইকমিশনের প্রথম সচিব এস এম আলমাস হোসেন, আখাউড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জি এম রাশেদুল ইসলাম, ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি আব্দুস সাত্তার, আখাউড়া থানার ওসি মো. ছমিউদ্দিন, আইসিপি ক্যাম্প কমান্ডার মো. মোখলেছুর রহমান, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন কর্মকর্তারা ও প্রত্যাবাসিতদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ত্রিপুরায় অবৈধ প্রবেশের অভিযোগে গত এক দেয়্ড় বছরের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ১১ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছিল। স্থানীয় আদালতের নির্দেশে তাদের পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার নরসিংগর কারাগারে পাঠানো হয়। পরে, আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন তাদের নাগরিকত্ব যাচাই শেষে দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য ভারত সরকারের অনাপত্তি সনদ গ্রহণ করে।
আগরতলার বাংলাদেশ মিশনের সহকারী কনস্যুলার ওমর শরীফ বলেন, 'ভারতীয় পুলিশ বিভিন্ন সময় অবৈধ প্রবেশের জন্য এই ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে এবং আদালতের নির্দেশে তাদের ৬ মাসের সাজা দেওয়া হয়। সাজা শেষে তারা আজ দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরত আসা সবাই পশ্চিম ত্রিপুরার নরসিংগরের ডিটেনশন সেন্টারে ছিলেন।'
তিনি আরও বলেন, 'আজ আমরা ১১ বাংলাদেশিকে প্রত্যাবাসন করাতে পেরে সত্যিই আনন্দিত। আরও ১৪ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনার কাজ চলমান। নাগরিকত্ব নিশ্চিত হলেই তাদের দেশে ফেরত আনা হবে।’
দেশে ফিরে আসা ফারজানা আহমেদ নিপা জানান, ‘দেশে থাকতে তিনি পার্লারে কাজ করতেন। বন্যায় ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তিনি ভারতের ব্যাঙ্গালোরে কাজ পাবেন এই প্রলোভনে নয় মাস আগে সীমান্ত অতিক্রম করেন। তবে সেদেশে পৌঁছানোর পরেই তিনি পুলিশের কাছে ধরা পড়ে জেলে যান।’
ব্র্যাকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো. শিহাবুল হোসেন জানান, ‘আমরা তাদের দুদেশের শূন্যরেখায় স্বাগত জানিয়েছি। পরে জরুরি সহায়তা হিসেবে তাদের আমরা খাবার, কাউন্সেলিং সেবা ও নগদ তিন হাজার টাকা করে যাতায়াতের জন্য অর্থ সহায়তা দিয়েছি।’
ভবিষ্যতে তাদের সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগাম তাদের পাশে থাকবে বলেও জানান তিনি।