আওয়ামী লীগ নেতাকে ছাড়াতে থানায় বিএনপির দুপক্ষের হাতাহাতি


রাজশাহীতে গত ৫ আগস্ট আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে ছাড়াতে তদবির করতে গেলে থানার মধ্যেই বিএনপি নেতাদের দুপক্ষের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে বোয়ালিয়া মডেল থানার ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে।
আবুল কালাম পবা উপজেলার পারিলাতে একসময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তিনি রাজশাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি ও রাজশাহী ইউরিয়া সার ডিলার সমিতির সভাপতিও ছিলেন।
কৃষকদলের রাজশাহী বিভাগীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আলামিন সরকার টিটু অভিযোগ করে বলেন, ‘আওয়ামী সরকারের দোসর জানার পরেও বিএনপির কিছু নামধারী নেতা থানা থেকে আসামিকে ছাড়িয়ে নিতে তদবির করতে আসেন। বিষয়টি দুঃখজনক।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিবাদ করার কারণে থানার ভেতরে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) সকলের সামনে আমাকে আবুল কালাম লাথি মারেন। এছাড়া শাহমখদুম থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক জিল্লুর রহমানসহ রাজশাহী নগর বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের কিছু নামধারী নেতা-কর্মীরা আমাদের লাঞ্ছিত করেন।’
অন্যদিকে, জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আবুল কালাম আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী হওয়ায় দেখা করতে গিয়েছিলাম। আওয়ামী শাসনামলে আবুল কালামকে ইউরিয়া সার ডিলার সমিতির সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ২০২৪ সালে (তৎকালীন রাসিক) মেয়র লিটনের মামলার শিকার হন তিনি।’
‘আবুল কালাম একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তিনি বিএনপির রাজনীতি করতেন। ব্যবসায়িক স্বার্থে তাকে মেয়র লিটনসহ বিভন্ন আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে চলতে হতো।’
জিল্লুর রহমানের অভিযোগ, মূলত ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান সমিতি দখল করতেই আবুল কালামকে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, আসামি আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করার পর নগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা গতকাল (শনিবার) থানা প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন। দলটির অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী জড়ো হওয়ার পর তারা একে অপরের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা শুরু করে। একপর্যায়ে হাতাহাতিও শুরু হয়।
বোয়লিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘বিএনপির বেশ কিছু নেতা আবুল কালামের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। এজহারভুক্ত আসামি হওয়ায় তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় থানার মধ্যে বিএনপি নেতাদের মধ্যে কিছু অপ্রতিকর ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।’