সিরিজ নিশ্চিতের ম্যাচে সম্ভাব্য বাংলাদেশ একাদশ


আউটারে নেট সেশন শেষে ব্যাটাররা পালাক্রমে সেন্টার উইকেটে অনুশীলনে নামেন। পুরো সেশনজুড়ে ছিল স্পিন বলের মোকাবিলা। কোচ ফিল সিমন্স ব্যাটারদের সামনে-পেছনে শট খেলার অনুশীলন করান এবং গ্রাউন্ড শটে মনোযোগ দিতে নির্দেশ দেন। সৌম্য সরকারের মতো কয়েকজনকে ছোট ব্যাট দেওয়া হয়, যাতে তারা সামনে এগিয়ে খেলার অভ্যাস গড়েন। এসবই ইঙ্গিত দিচ্ছে, সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় ম্যাচের উইকেটও টার্নিং হতে যাচ্ছে।
এ ধরনের কন্ডিশনে শোভন স্কোর ম্যাচ জেতার জন্য যথেষ্ট। ব্যাটাররা ২৪০ থেকে ২৫০ রান দিতে পারলে প্রভাব বিস্তার করবেন স্পিনাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দলের পক্ষে ওই রান তাড়া করা কঠিন। এ কারণেই কোচ ব্যাটিংয়ে জোর দেন অনুশীলনে। গতকালের অনুশীলনে শেখা কৌশলগুলো কার্যকর করা গেলে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জিততে পারে বাংলাদেশ। স্পিন কোচ মুস্তাক আহমেদের আত্মবিশ্বাস আরও বেশি। দ্বিতীয় ম্যাচের আগেই ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় দেখতে পাচ্ছেন তিনি।
২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ মাথায় রেখে তিন ম্যাচের এ সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সরাসরি বিশ্বকাপে খেলতে হলে ওই বছরের ৩০ মার্চের মধ্যে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়েকে বাদ দিয়ে সেরা আটে থাকতে হবে উভয় দলকে। র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করার এই লড়াই আগে শুরু হলেও এখন সেটা তীব্র হচ্ছে। ২০২৭ সালের ৩০ মার্চ যত কাছে আসবে, এই লড়াই তীব্রতর হবে। বাংলাদেশ ওই পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চায় না। তারা দেশের সব সিরিজ জিততে চায়। মেহেদী হাসান মিরাজদের লক্ষ্য বছরের শেষ সিরিজ থেকে পূর্ণ পয়েন্ট নেওয়া। সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে আজ সিরিজ নিশ্চিত করতে হবে টাইগারদের।
ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে স্পিন কোচের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জেতা সম্ভব কিনা? তিনি উত্তরে বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, আমরা সেটা করতে পারব। আমরা ছেলেদের ওপর আস্থা রেখে সাহায্য করি। বিশ্বাসই সবকিছুর মূল। আমার নিজের বিশ্বাস না থাকলে খেলোয়াড়রা আমার কথা গ্রহণ করবে না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হচ্ছে মেজাজ ও বিশ্বাস নিয়ে খেলা। বাংলাদেশে প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে এবং তারা যে কোনো দলকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। এই বিশ্বাস রাখতে হবে।’
সিরিজের সব ম্যাচ টার্নিং উইকেটে খেলা হবে। এ ধরনের কন্ডিশনে ব্যাটিং করতে পারাও আর্ট। যদিও এই কৌশলের সঙ্গে বেশির ভাগ খেলোয়াড় অভ্যস্ত নয়। স্পোর্টিং উইকেটে খেলার দাবি জানানো টাইগারদের এখন আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলতে হচ্ছে স্লো, লো ও টার্নিং উইকেটে। এই উইকেটে শোভন স্কোর গড়ে তোলার কৌশল নিয়ে কাজ করছেন কোচিং স্টাফ।
মুস্তাক বলেন, ‘আমরা চেয়েছি অনুশীলন ম্যাচের মতো পরিবেশ দিতে। ব্যাটারদের জন্য খুব দরকার ম্যাচের মতো বাস্তবতা দেওয়া। তারা যেন বুঝতে পারে, কাল (আজ) এ রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। সিমন্স চাচ্ছিলেন ব্যাটারদের শেখাতে কীভাবে মিডল ওভারে সিঙ্গেল নিতে হয়, কীভাবে ঘুরিয়ে খেলা যায়। এজন্য স্পিনারদের ফিল্ড সেট করতেও বলা হয়েছিল। আজকের অনুশীলনটা তাই অনেকটা ম্যাচ সদৃশ ছিল।’
সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে চার স্পিনার নিয়ে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। টিম ম্যানেজমেন্টের একজন সদস্য জানান, আজ উইকেট দেখার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে উইকেট বিবেচনায় চারজন স্পিনারকে খেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। একমাত্র পেসার মুস্তাফিজুর রহমান খেলবেন। বিশ্রাম দেওয়া হবে তাসকিন আহমেদকে। ব্যাটিং লাইনআপ অপরিবর্তিত রাখা হতে পারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজও একাদশে স্পিনার বাড়াবে। গতরাতেই আকিল হোসেনের ঢাকায় পৌঁছানোর কথা।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: সৌম্য সরকার, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, নুরুল হাসান সোহান, মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), রিশাদ হোসেন, তানভির ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান ও নাসুম আহমেদ।