রিশাদের ঘূর্ণিতে বাংলাদেশের বড় জয়


ঘরের মাঠে রিশাদ হোসেনের লেগ স্পিনের ঘূর্ণিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭৪ রানে হারাল টাইগাররা।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ৪৯.৪ ওভারে ২০৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাত্র ১৩৩ রানেই গুটিয়ে যায়।
ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং লাইনআপকে গুঁড়িয়ে ৩৫ রানে ৬ উইকেট শিকার করেন রিশাদ। ওয়ানডেতে ৬ উইকেট নেওয়া বাংলাদেশের চতুর্থ বোলার এই তরুণ লেগ স্পিনার।
এর আগে কেনিয়ার বিপক্ষে ২৬ রানে ৬ উইকেট পেয়েছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে রুবেল হোসেনও ২৬ রানে ৬ উইকেট শিকার করেছিলেন। এ ছাড়া ভারতের বিপক্ষে ৪৩ রানে ৬ উইকেট পান মোস্তাফিজুর রহমান।
জবাবে রান তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। উদ্বোধনী জুটিতে ৫১ রান যোগ করেন ব্র্যান্ডন কিং ও আলিক আথানেজ। তবে ১২তম ওভারে আক্রমণে এসেই এই জুটি ভাঙেন রিশাদ। এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন ৩৬ বলে ২৭ রান করা আথানেজ।
এরপর দ্বিতীয় উইকেটে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন কিং ও কেসি কার্টি। ২০তম ওভারে ২৮ রানের এই জুটিও ভাঙেন রিশাদ। এরপর ১৩ রানের মধ্যে কিং, শেরফান রাদারফোর্ড ও রস্টোন চেজকে ফিরিয়ে ৫ উইকেট শিকার করেন তরুণ লেগ স্পিনার।
বিশ্বের মাত্র দ্বিতীয় লেগ স্পিনার হিসেবে কোনো ইনিংসে প্রথম ৫ উইকেট নিলেন বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটার। ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ৬ উইকেট একাই নিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার লেগ স্পিনার জেফ্রি ভ্যান্ডারসে।
ক্যারিবিয়ানদের পক্ষে ৬০ বলে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করে ফেরেন কিং। এরপর উইকেট শিকারের উৎসবে যোগ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১০০ হতেই গুদাকেশ মোতিকে আউট করেন তিনি।
এরপর বাংলাদেশের জয়ের পথে বাধা হয়ে থাকা শাই হোপকে কট বিহাইন্ড করেন তানভির ইসলাম। বাকি কাজ সারতে একদমই সমস্যা হয়নি। নতুন স্পেলে ফিরে ২ উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান। আর ৩৯তম ওভারের শেষ বলে খ্যারি পিয়েরেকে আউট করে ৬ উইকেট পূর্ণ করেন রিশাদ।
এর আগে ম্যাচের প্রথমভাগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই স্পিনার খ্যারি পিয়েরে ও চেজ করেন দুর্দান্ত বোলিং, পান বড় বড় টার্নের দেখা। নতুন বলে পেসারদের বাউন্সও ছিল চোখে পড়ার মতো।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও সৌম্য সরকারের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শুরুর ধাক্কা সামলে দ্বিতীয় উইকেটে ১২২ বলে ৭১ রানের জুটি গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত ও হৃদয়। ৬৩ বলে ৩২ রান করে আউট হন শান্ত। এরপর অঙ্কনকে নিয়ে এগিয়ে যান হৃদয়। ৩০ ওভারে পূর্ণ হয় দলের একশ রান।
ক্যারিয়ারের ১১তম ফিফটি করে আর টিকতে পারেননি মিডল-অর্ডার ব্যাটার। ৯০ বলে ৫১ রান করে কট বিহাইন্ড হন হৃদয়। অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন অঙ্কন। চেজের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন ১৭ রান করা মিরাজ। চেজের পরের ওভারে বোল্ড হন ৭৬ বলে ৪৬ রান করা অভিষিক্ত মিডল-অর্ডার ব্যাটার অঙ্কন।
ইনিংসের ৪৮তম ওভারে প্রথম ছক্কা মারেন রিশাদ। তার ব্যাট থেকে আসে ১৩ বলে ২৬ রান। এছাড়া ৪ বলে ৯ রান করে দলকে দুইশ পার করান তানভির ইসলাম।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন জেডেন সিলস। তবু খরুচে বোলিং করেন তিনি। খ্যারি পিয়েরে ১০ ওভারে মাত্র ১৯ রানে নেন ১ উইকেট। রস্টোন চেজের শিকার ৩০ রানে ২ উইকেট।