মেসি বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি


বিশেষ এক রাতের কথা বলেছিলেন লিওনেল মেসি। সেটা গত মাসে। ভেনেজুয়েলা ম্যাচ সামনে রেখে বলেছিলেন, ‘আমার জন্য এটা হবে খুব খুব বিশেষ ম্যাচ। কারণ, বাছাইপর্বে (ঘরের মাঠে) এটাই শেষ ম্যাচ।’
তত দিনে এটাও নিশ্চিত হওয়া গেছে শুধু বিশ্বকাপ বাছাই নয়, আর্জেন্টিনার মাটিতে দেশের জার্সিতে এটা হতে যাচ্ছে মেসির শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ। আর্জেন্টিনার স্থানীয় সময় অনুযায়ী রাতটা তাই মেসির জন্য বিশেষই ছিল।
বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী সেটা আজ সকালে। কিংবদন্তি ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে মাঠে নামলেন। গ্যালারিতে ছিল তাঁর পরিবার। আর্জেন্টিনার জাতীয় সংগীতের সময় তিন ছেলে এসে দাঁড়িয়েছিল পাশে। আর মাঠের চারপাশে গগনবিদারী আওয়াজ, ‘ওলে, ওলে, ওলে...মেসি, মেসি, মেসি!’ ২০ বছরের ক্যারিয়ারে আর কী লাগে!
আরও যা যা লাগে—যেমন ধরুন, কোপা আমেরিকা ও বিশ্বকাপ, মেসি সেসব জিতে আর্জেন্টাইনদের কাছে দেওয়া ‘প্রমিজ’ রেখে এখন ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে। আজ যেমন বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ঘরের মাঠে নিজের শেষ ম্যাচটা খেললেন, যেটা হয়ে যেতে পারে দেশের মাটিতে জাতীয় দলের হয়ে তাঁর শেষ ম্যাচও; ২০২৬ বিশ্বকাপ মাথায় রেখে কেউ কেউ আজ থেকেই হয়তো মেসির শেষের শুরুর দিনগণনা শুরু করলেন। মেসির কথায়ও কিন্তু তেমন সুর।
ভেনেজুয়েলাকে ৩-০ গোলে হারানোর ম্যাচে জোড়া গোল করা মেসি জয়ের পর বলেছেন, ‘এখানে (দেশের মাটিতে) এভাবে শেষ করার স্বপ্ন দেখেছি সব সময়...নিজের দেশে, নিজের মানুষদের সঙ্গে নিয়ে এটার স্বপ্ন ছিল।’
মেসির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলবেন কি না? উত্তর এসেছে, ‘দেখা যাক।’
দেশের মাটিতে নিজের শেষ অফিশিয়াল ম্যাচ খেলা প্রসঙ্গে কিংবদন্তি বলেছেন, ‘অনেক আবেগ কাজ করছে। মাঠে অনেক কিছুর ভেতর দিয়ে গিয়েছি। নিজের মানুষদের সামনে আর্জেন্টিনায় খেলাটা সব সময়ই আনন্দের। বছরের পর বছর আমরা ম্যাচগুলো এভাবেই উপভোগ করছি। এখানে এভাবে শেষ করতে পেরে ভালো লাগছে, যেটা স্বপ্ন দেখেছি সব সময়।’
মেসি এরপর বলেছেন, ‘অনেক বছর ধরে অনেক কিছুই বলা হয়েছে, কিন্তু আমি সব ভালো স্মৃতি নিয়েই থাকব। এই দলটা যা কিছু ভালো করার চেষ্টা করেছে, তার সবকিছুই...সুন্দর এক সময় পার করেছি আমরা। আজ ছিল পয়েন্টের জন্য (প্রতিযোগিতামূলক) শেষ ম্যাচ।’
২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা প্রসঙ্গে মেসি সেই পুরোনো কথাই বলেছেন। দিন ধরে ধরে এগোতে চান, ‘একই কথা, যেটা এর আগেও বলেছি বিশ্বকাপ নিয়ে, মনে হয় না আরেকটি খেলতে পারব। কারণ আমার বয়স। বড় যুক্তিটা হলো, আমি কুলিয়ে উঠতে পারব না। কিন্তু আর বেশি দিন তো নেই। আমি এটায় (বিশ্বকাপে) খেলার প্রেরণা পাচ্ছি। যেটা এর আগেও বলেছি, আমি দিন ধরে ধরে এবং ম্যাচ ধরে ধরে এগোই।’
মেসি এরপর ব্যাখ্যা করেন, ‘দিন ধরে ধরে এগিয়ে ভালো থাকা এবং নিজের সঙ্গে সৎ থাকাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভালো অনুভব করলে (খেলাটা) উপভোগ করি। ভালো না লাগলে করি না। তাই ভালো না লাগলে সেখানে (বিশ্বকাপে) না থাকাটাই আমার পছন্দ। দেখা যাক কী হয়, বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি।’
মেসি এরপর বলেন, ‘ম্যাচ ধরে ধরে মৌসুমটা শেষ করব। এরপর প্রাক্–মৌসুম পাব এবং ছয় মাস সময় বাকি থাকবে। দেখা যাক কী হয়। আশা করি ২০২৬ সালের প্রাক্–মৌসুমটা ভালো কাটবে এবং এমএলএসের মৌসুম। তারপর সিদ্ধান্ত নেব।’
১০ সেপ্টেম্বর ইকুয়েডরের মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এটাই লিওনেল স্কালোনির দলের শেষ ম্যাচ এবং সেটা হবে ইকুয়েডরে। মেসি জানিয়েছেন, বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আর্জেন্টিনার এই শেষ ম্যাচে তিনি খেলবেন না।