যুক্তরাষ্ট্রে জাপানি গাড়ির শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশে আনলেন ট্রাম্প

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট ডেস্ক
প্রকাশিত:০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রে জাপানি গাড়ির শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশে আনলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার জাপানি গাড়ির শুল্ক কমাতে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। টোকিওর সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি কার্যকরের অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ সংবাদ জানায়।

হোয়াইট হাউস প্রকাশিত নির্বাহী আদেশে বলা হয়, জাপানি গাড়ির বর্তমান শুল্ক ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামানো হবে। অন্যান্য অনেক পণ্যের ক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ শুল্কহার ১৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখা হবে।

চুক্তির এ ফলাফল জাপানের জন্য একটি বড় জয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ চুক্তি কার্যকর করতে টোকিওর শুল্ক বিষয়ক দূত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে এসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ পদক্ষেপ উভয় দেশের চুক্তি ঘোষণার কয়েক সপ্তাহ পর নেওয়া হলো।

জাপানের শীর্ষ সরকারি মুখপাত্র ইয়োশিমাসা হায়াশি বলেন, জাপান এই নির্বাহী আদেশকে স্বাগত জানাচ্ছে। এটি চুক্তিটির ‘দৃঢ় বাস্তবায়ন’ নিশ্চিত করবে।

এর আগে উভয় পক্ষ জুলাই মাসের শেষ দিকে একটি বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণা করলেও বিস্তারিত বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়।

গত আগস্টের শুরুতে ট্রাম্প যখন অনেক দেশের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন, তখন জাপানের পণ্যের ওপরও বিদ্যমান শুল্কের সঙ্গে ১৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক যুক্ত হয়।

জাপানের শুল্ক বিষয়ক দূত রয়োসেই আকাজাওয়া এর আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে ওয়াশিংটন এই নিয়মটি সংশোধন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নতুন আদেশ অনুযায়ী, ৭ আগস্ট থেকে যেসব পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে, সেগুলোর ওপর ১৫ শতাংশ শুল্কের সীমা কার্যকর হবে। সংশোধিত বিধান ফেডারেল রেজিস্টারে প্রকাশিত হওয়ার সাত দিনের মধ্যে কার্যকর হবে।

দেশভিত্তিক শুল্ক ছাড়াও ট্রাম্প খাত-ভিত্তিক আলাদা শুল্কও আরোপ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে গাড়ি ও যন্ত্রাংশের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক।

বিদ্যমান ২ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্কের সঙ্গে এই শুল্ক যোগ হয়ে জাপানি গাড়ি শিল্পের ওপর মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৭ দশমিক ৫ শতাংশে।

এই ভারী শুল্ক জাপানের অটোমোবাইল শিল্পের জন্য বড় আঘাত ছিল, যা দেশের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় আট শতাংশ জুড়ে আছে।

এই চুক্তির মাধ্যমে জাপান ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতোই স্বস্তি পেল, যেখানে অনেক পণ্যের সর্বোচ্চ শুল্কহার ১৫ শতাংশ।

তবে শুক্রবার ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জাপানি দূত রিওসেই আকাজাওয়া বলেন, ১৫ শতাংশ শুল্ক ‘তবুও আমাদের শিল্পের ক্ষতি করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাপান সরকার আর্থিক সহায়তার মতো দ্রুত ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’
যুক্তরাষ্ট্র সফরে আকাজাওয়া ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী জাপানের ৫৫০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ নিয়েও আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের আদেশ অনুযায়ী, এসব বিনিয়োগ যুক্তরাষ্ট্র সরকার দ্বারা নির্বাচিত হবে, তবে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি।

শুক্রবার ইশিবা জানান, টোকিও ওয়াশিংটনে একটি চিঠি পাঠিয়েছে যেখানে বলা হয়েছে, আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে মিলে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি সোনালি যুগ গড়তে চাই এবং আমরা তাকে জাপানে আমন্ত্রণ জানাতে চাই।

ট্রাম্প বলেছেন, এই বিনিয়োগ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ৯০ শতাংশ মুনাফা রাখবে। তবে জাপান জানিয়েছে যে এই বিনিয়োগের বেশিরভাগই হবে ঋণ ও ঋণ গ্যারান্টি।

নিক্কেই বিজনেস ডেইলি জানায়, এর আগে আকাজাওয়া ওয়াশিংটন সফর বাতিল করেছিলেন। কারণ যুক্তরাষ্ট্র জানায়, প্রেসিডেন্টের আদেশে জাপানি কৃষিপণ্যের শুল্ক কমানোর বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভাবছে।

ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে জাপানকে আরও বেশি আমেরিকান চাল আমদানি করতে চাপ দিয়ে আসছেন।