‘হাদি তুই তো এমপি-মন্ত্রীর চেয়েও অনেক বড়’

Bangla Post Desk
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪৭ পিএম
‘হাদি তুই তো এমপি-মন্ত্রীর চেয়েও অনেক বড়’
শরিফ ওসমান বিন হাদি। ছবি- সংগৃহীত

সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে নিয়ে আবেগঘন ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন ঝালকাঠি-১ আসন থেকে এনসিপির সংসদ সদস্য প্রার্থী ডা. মাহমুদা মিতু। বর্তমানে সংকটাপন্ন অবস্থায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন হাদি

শুক্রবার গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ঘটনার পরপরই ঢাকা মেডিকেলে ছুটে যান ডা. মাহমুদা মিতু। ওই সময়কার অভিজ্ঞতা ও মানসিক অবস্থার কথা তিনি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে তুলে ধরেন।

পোস্টে ডা. মাহমুদা মিতু জানান, হাদি বর্তমানে সহায়ক ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। অর্থাৎ তিনি নিজে থেকে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করছেন এবং সেই শ্বাসপ্রশ্বাসকে যন্ত্রের মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

 ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার সময়ের বর্ণনায় তিনি লেখেন, দ্রুততার সঙ্গে হাসপাতালে পৌঁছালেও সময় যেন থেমে যাচ্ছিল। সেখানে পৌঁছে তিনি দেখেন, হাদির কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে এবং সিপিআর দেওয়ার পরও নিয়মিত পালস পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে নিউরোলজি, ইএনটি ও থোরাসিক সার্জারির একাধিক মেডিকেল টিম জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচারে অংশ নেয়।

ডা. মাহমুদা মিতু আরও জানান, মাথার এক পাশের খুলির হাড় খুলে চাপ কমানোর অস্ত্রোপচারের পর হাদি স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা শুরু করেন। তবে মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও চাপে তার অবস্থা তখনো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল

ঢাকা মেডিকেল থেকে প্রোটোকল অনুসরণ করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়ার সময়ের অনুভূতি বর্ণনা করে তিনি লেখেন, সেই মুহূর্তের মানসিক অবস্থা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। তিনি উল্লেখ করেন, হাদির জন্য রাস্তা ফাঁকা করে অ্যাম্বুলেন্স চলার সময় সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ও আল্লাহু আকবর ধ্বনি তাকে গভীরভাবে আবেগতাড়িত করেছে।

পোস্টে তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধি হওয়ার আগেই যেভাবে মানুষ হাদির পাশে দাঁড়িয়েছে, তাতে তিনি একজন এমপি বা মন্ত্রীর চেয়েও বড় মর্যাদা অর্জন করেছেন। সাধারণ মানুষ তার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে দাঁড়িয়ে থাকতে প্রস্তুত ছিল বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

 ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণায় ডা. মাহমুদা মিতু জানান, কয়েক দিন আগে বেইলি রোডে হাদির সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল। সেদিনের ছোট ছোট ঘটনাগুলো এখন তাকে গভীর অনুশোচনায় ভোগাচ্ছে। তিনি লেখেন, মানুষ মৃত্যুর মুখে পড়লেই প্রিয়জনদের গুরুত্ব উপলব্ধি হয়, অথচ জীবিত অবস্থায় আমরা অনেক সময়ই তা ভুলে থাকি।

পোস্টের শেষ অংশে তিনি বলেন, বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকার বুকে যেন একটি গুলি এসে বিদ্ধ হয়েছে। এই ঘটনার পর তার মানসিক শক্তি ভেঙে পড়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বিপি/ এএস