যুবকদের ভোট নিয়ে কাড়াকাড়ি বরদাস্ত করবো না: জামায়াত আমির

যুবকদের ভোট নিয়ে কাড়াকাড়ি করলে তা বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়েছেন জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, যুবকেরা তোমাদের ভোট তোমরা দিবা। আমরা তোমাদের পাশে থেকে লড়াই করব। তোমাদের সাহস দেব এবং শক্তি দেব।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাতে জামায়াতে ইসলামীর কাফরুল দক্ষিণ থানার উদ্যোগে প্রীতি সমাবেশে তিনি এসব বলেন।

আগামী নির্বাচনে কেউ কেউ গাছে কাঁঠাল রেখে গোপে তেল দিচ্ছেন মন্তব্য করে জামায়াত আমির বলেন, মাসল আর ব্যাগ মানির মাধ্যমে অন্যের ভোট হাইজ্যাক করবেন। আমাদের তাদের প্রতি স্পষ্ট বার্তা আমরা যুবক হয়ে বিস্ফোরিত হবো ইনশাল্লাহ।

তরুণ যুবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, তোমার যাকে পছন্দ তাকে ভোট দিও। আমাকে দিবা না দিবা এটা তোমার ব্যাপার। কিন্তু তোমার বুকের জন্য আমরা লড়ে যাব ইনশাল্লাহ।

শেখ হাসিনার মামলার রায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা মনে করি এর মধ্য দিয়ে মজলুমানের কান্না কিছু হলেও থামবে। স্বজনহারা পরিবারগুলো সাময়িক কিছু সান্ত্বনা পাবে তবে আমরা মনে করি এই বিচার ন্যায় বিচারের মানদণ্ড হয়েছে কারণ বিচার ছিল স্পষ্ট লাইভে এই বিচার সম্প্রচার করা হয়েছে। আমরা সরকার এবং বিচার বিভাগের প্রতি আহ্বান জানাবো যে আপনার তার উপযুক্ত পদক্ষেপ নিন।

জামায়াত আমির বলেন, আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট। আমরা কারো ওপর কোনো অবিচার চাই না। প্রত্যেকটি নাগরিকের অধিকার আছে ন্যায়বিচার পাওয়া। তাদেরও কারো ওপর অবিচার হোক সেটাও আমরা চাই।

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে কোনো সম্পদশালীর সম্পদ কেড়ে নেবে না, বরং তাদের সম্পদের পাহারাদারি করবে উল্লেখ করে ডা. শফিকুর বলেন, কোনো চাঁদাবাজ একজন শিল্পপতি, ব্যবসায়ীর কাছে গিয়ে এটা বলার সাহস পাবে না এলাকায় ব্যবসা করতে হলে আমাদের দিকে চাইতে হবে, আমাদের দেখতে হবে, আমাদের কথা শুনতে হবে, আমাদের চাহিদা পূরণ করতে হবে। বাপ-দাদার জমিদারি ও ব্যবসায়ীদের ভাড়াটিয়া ভাবা সমস্ত সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের সমাজ থেকে তাড়াব, নির্মূল করব। কোনো চাঁদাবাজের অস্তিত্ব রাখা হবে না।

চাঁদার জ্বালায় ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, বাংলাদেশ যদি চাঁদাবাজ মুক্ত হয়ে যায়, তাহলে দেশের অগ্রগতি লাফিয়ে লাফিয়ে সামনের দিকে যাবে। এখন যে দ্রব্যমূল্য তা অর্ধেকে নেমে আসবে। উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারজাত পর্যন্ত হোলসেলার থেকে শুরু করে রিটেইলার এমনকি ফুটপাতের আমার একজন সাধারণ ব্যবসায়ী ভাই একজন হকার সেও চাঁদাবাজদের কবল থেকে মুক্ত নয়। আমরা তাদের কথা দিচ্ছি- ভাই, তোমাদের ফুটপাতে ব্যবসা করতে হবে না, ব্যবসা তোমরা সম্মানের সঙ্গে করবা এবং সেই জায়গাই তোমাদের করে দেওয়া হবে।

ডা. শফিকুর বলেন, আমাদের তৃতীয় প্রায়োরিটি হচ্ছে- আমাদের সমস্ত অর্থব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে, ব্যাংক বীমা কর্পোরেশন সেক্টর ইন্ডাস্ট্রি সব লুট হয়ে গেছে, উজাড় হয়ে গেছে। আমরা জনগণের সম্পদ জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার লড়াই করব। কতটুকু পারব জানি না কিন্তু লড়াই করব। ভবিষ্যতে আর কোনো দুর্বৃত্ত জনগণের সম্পদে যাতে হাত না দিতে পারে তার ব্যবস্থা করা হবে এবং দুর্নীতির শিকড় কেটে দেওয়া হবে।

কূটনীতি সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান হচ্ছে-বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক। আমাদের একেবারেই সাফ কথা, আমরা সব দেশের সঙ্গে, সভ্য দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করব। কিন্তু কারোই প্রভুত্ব আমরা মেনে নেব না। একটা স্বাধীন দেশ যেভাবে তার স্বাধীন রাষ্ট্রনীতি থাকার কথা, সেই স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতি আমরা গড়ে তুলব।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।