পুলিশ-প্রশাসনে আ. লীগের অনুগতদের রেখে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়: রিজভী


পুলিশ ও প্রশাসনে আওয়ামী লীগের অনুগতদের রেখে এবং শেখ হাসিনার শাসনামলে নিয়োগ পাওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকলে একটি বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘সবাই চায় রমজানের আগে ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হোক। কিন্তু আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রিত প্রশাসনের অধীনে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই, আওয়ামী লীগের কর্মীদের প্রশাসন থেকে অপসারণ করতে হবে।’
সোমবার (১৮ আগস্ট) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রিজভী এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৬ হাজার ৩৯৯ জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েজে। এই শিক্ষকদের বেশিরভাগই কোনো যোগ্যতাভিত্তিক প্রতিযোগিতা ছাড়াই নিয়োগ পেয়েছিল বলেও দাবি করেন বিএনপির এই নেতা।
বিএনপির এই নেতা প্রশ্ন রেখে আরও বলেন, এর মধ্যে ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ আওয়ামী লীগের অনুগত। ‘এই শিক্ষকরা যদি পোলিং অফিসার বা প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে কাজ করেন—তাহলে কি নির্বাচন সুষ্ঠু হবে? না।’
তিনি বলেন, তাদের নিয়োগের একমাত্র মানদণ্ড হলো তারা ছাত্রলীগ, যুবলীগ, নাকি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত।
রিজভী বলেন, ‘এইভাবে, প্রশাসন দলীয় অনুগতদের দিয়ে সাজানো হয়েছে। তাদের প্রশাসন থেকে অপসারণ করতে হবে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে বাদ দিতে হবে।’
তবে তিনি বলেন, তাদের দল বিএনপির অনুগতদের বিনিময়ে নিয়োগ দিতে চায় না। ‘আমরা চাই নিরপেক্ষ ব্যক্তিরা, যারা কোনোভাবেই পক্ষপাতদুষ্ট নন, তারা পোলিং অফিসার এবং প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করুক।’
নীলফামারী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির নতুন নেতাদের সঙ্গে রিজভী দলের প্রতিষ্ঠাতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
তিনি বলেন, গত ১৫ থেকে ১৬ বছর ধরে প্রশাসন এবং পুলিশ আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের দ্বারা প্রভাবিত। ‘প্রশাসনে তাদের রেখে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে নির্বাচন কমিশন এই বিষয়গুলোতে মনোযোগ দেবে এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করবে— যাতে ভোটাররা স্বাধীনভাবে ভোটকেন্দ্রে যেতে এবং তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পারে।
বিএনপি নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সহযোগীরা বিভিন্ন কৌশলে দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘তাদের সামরিক প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। আপনারা দেখেছেন যে, তাদের মধ্যে দুজনকে ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চিন্তা করুন, তারা এ ধরনের আরও কত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে... সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।’
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ব্যবস্থার বিরোধিতা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের মানুষ এই ধরনের নির্বাচনী ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুত নয়। ‘পিআর ব্যবস্থা বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত নয়। যারা পিআর ব্যবস্থায় নির্বাচন দাবি করে—তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ রয়েছে,’ বলেন তিনি।