এনবিআরের আরও ৫ কর্মকর্তা বরখাস্ত

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১৮ আগস্ট ২০২৫, ১০:৩১ পিএম
এনবিআরের আরও ৫ কর্মকর্তা বরখাস্ত

প্রথম দফায় চারজনের পর এনবিআরের আরও পাঁচ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে একদিনেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ৯ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে এনবিআর সংস্কার আন্দোলনের কর্মসূচি পালন ও দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

আজ সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) থেকে পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ জারি করা হয়। এতে সই করেছেন আইআরডি সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তার হলেন—এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের (সিআইসি) পরিচালক চাঁদ সুলতানা চৌধুরানী; আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের অতিরিক্ত কর কমিশনার সোহেলা সিদ্দিকা; ঢাকা কর অঞ্চল-৭ এর অতিরিক্ত কমিশনার সুলতানা হাবীব; ফরিদপুর কর অঞ্চলের যুগ্ম কমিশনার মো. মেজবাহ উদ্দিস খান; দিনাজপুরের কর অঞ্চলের পরিদর্শী রেঞ্জ-২ এর যুগ্ম কর কমিশনার মো. মামুন মিয়া।

এর আগে একই অভিযোগে সিলেট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কণ্ডু; মোংলা কাস্টমস হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার আবুল আ’লা মোহাম্মদ আমীমুল ইহসান খান; চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং অ্যাকাডেমির যুগ্ম কমিশনার মো. সানোয়ারুল কবির; এবং খুলনা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আদেশে বলা হয়, সরকার গত ১২ মে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারির পর এর বিরোধিতা করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট এবং আয়কর বিভাগের কর্মচারীদের কর্মসূচি চলাকালীন দায়িত্বরত কর্মচারীদের দাপ্তরিক কাজ সম্পাদনে বাধা প্রদান এবং কাজ ত্যাগ করে রাজস্ব ভবনে আসতে বাধ্য করতে সংগঠকের ভূমিকা পালনের মাধ্যমে দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে; সেহেতু, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা-৩৯(১) অনুযায়ী তাঁদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগপূর্বক চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

আদেশে আরও বলা হয়, সাময়িক বরখাস্তকালীন বিধি মোতাবেক তারা খোরপোশ ভাতা পাবেন। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

গত মে ও জুন মাসে এনবিআরে যে আন্দোলন হয়েছে, বরখাস্ত সবাই ওই আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে জানা গেছে। কেউ কেউ নেতৃত্বও দিয়েছেন। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এই আন্দোলন হয়।

গত ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা—এই দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশ জারি হয়। এর পর থেকে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে যৌক্তিক সংস্কারে দাবিতে প্রায় দেড় মাস আন্দোলন করেন।

২৮ ও ২৯ জুন সারা দেশে কাজ বন্ধ করে দেন তাঁরা। এরপর ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করেন তাঁরা। এরপরই কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়। আন্দোলন প্রত্যাহারের পর কয়েকজনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত ৩০ জনের বেশি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বরখাস্ত করা হয়েছে। ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুদক।