জুলাই ঘোষণাপত্র সংশোধনের দাবি জানাল জামায়াত

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:০৭ আগস্ট ২০২৫, ০৯:১৫ পিএম
জুলাই ঘোষণাপত্র সংশোধনের দাবি জানাল জামায়াত

জুলাই ঘোষণাপত্রে একটি নির্দিষ্ট দলের চিন্তা-চেতনা প্রকাশ পেয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে এটি সংশোধনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, রাজনীতির ময়দানে নির্দিষ্ট দলের চিন্তা-চেতনা প্রকাশ পাওয়া নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এক অনুষ্ঠানে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল এই দাবি জানান।

তিনি বলেন, ‘জাতি জুলাই বিপ্লবের অপেক্ষায় ছিল। দেশের ইতিহাসে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে। তবে শত শত মানুষের রক্ত ও জীবন যদি ব্যর্থ হয়ে যায়—তাহলে আরেকটি ফ্যাসিবাদের জন্ম হতে পারে।’

গোলাম পরওয়ার অভিযোগ করে বলেন, ‘বিচারক হত্যা, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের ঘটনা এবং শিক্ষকদের অবদান—এসব কিছুই জুলাই ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। জুলাইয়ের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল—তা ঘোষণাপত্রে প্রতিফলিত হয়নি। এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে ঘোষণাপত্রটি সংশোধন করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্রে ইসলামপন্থীদের অবদান মূল্যায়িত হয়নি। প্রধান উপদেষ্টার তৈরি ঘোষণাপত্রটি অসম্পূর্ণ। বিদ্যমান ব্যবস্থায় নির্বাচন হলে নতুন ফ্যাসিবাদের জন্ম হতে পারে। নির্বাচনের সময় ঘোষণাকে ইতিবাচক বলা হলেও, প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে—তা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা হবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনেই ‘জুলাই সনদের’ আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করে সেই আলোকে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন আয়োজিত ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে ‘ছাত্র-শিক্ষক-জনতার অবদান ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক এবিএম ফজলুল করীমের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের সভাপতি ড. এম কোরবান আলী। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘রন্ধ্রে রন্ধ্রে ফ্যাসিবাদ লুকিয়ে আছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে জাতীয় নির্বাচন সম্ভব নয়। প্রত্যেক বিভাগে শিক্ষার মান নিশ্চিত করা সময়ের অনিবার্য দাবি। যাদের কারণে দ্বিতীয় স্বাধীনতার সূচনা হয়েছিল—সেই শ্রমিক, মুটে-মজুর ও শিক্ষকরা—জুলাই ঘোষণাপত্রে উপেক্ষিত। তাই দেশ ও জাতির স্বার্থে অন্তঃসারশূন্য এ ঘোষণাপত্র সংশোধন করতে হবে।’

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। এছাড়াও বক্তব্য দেন— বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ সভাপতি জিএম আলাউদ্দিন, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক পরিষদ অধ্যক্ষ ড. মো. সাখাওয়াত হোসাইন, বাংলাদেশ মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক পরিষদ সভাপতি অধ্যক্ষ মো. মুনজুরুল হক, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক পরিষদ সভাপতি অধ্যাপক নূর নবী মানিক, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ সভাপতি অধ্যক্ষ ড. মাওলানা শাহজাহান মাদানী, বাংলাদেশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদ সভাপতি অধ্যাপক ড. উমার আলী প্রমুখ।