চলতি বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রকাশিত দেশের ক্রয় ব্যবস্থাপক সূচকে (পিএমআই) উঠে এসেছে।
এতে দেখা যায়, জুন মাসের তুলনায় পিএমআই ৮ দশমিক ৪ পয়েন্ট বেড়ে ৬১ দশমিক ৫ এ পৌঁছেছে। এটি মূলত অর্থনৈতিক কার্যকলাপে একটি শক্তিশালী সম্প্রসারণের ইঙ্গিত দেয়।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ (পিইবি) যৌথভাবে জুলাই পিএমআই প্রকাশ করেছে। যাতে দেশের অর্থনৈতিক দৃশ্যপটের প্রতি ক্রমবর্ধমান আস্থার প্রতিফলন উঠে এসেছে।
যুক্তরাজ্য সরকারের সহায়তা ও সিঙ্গাপুর ইনস্টিটিউট অব পারচেজিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস ম্যানেজমেন্ট (এসআইপিএমএম) এর কারিগরি সহায়তায় প্রস্তুত করা বাংলাদেশ পিএমআই একটি অগ্রণী উদ্যোগ। এটি ব্যবসা, বিনিয়োগকারী এবং নীতিনির্ধারকদের জন্য সময়োপযোগী, নির্ভরযোগ্য অবস্থা তুলে ধরতে উদ্যোগটির নকশা করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, সর্বশেষ পিএমআই সূচক মূলত উৎপাদন ও পরিষেবা খাতে দ্রুত সম্প্রসারণের মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছে।
নির্মাণ খাতও প্রবৃদ্ধিতে ফিরে এসেছে। অন্যদিকে কৃষি খাত যদিও এখনও সম্প্রসারিত হলেও মৌসুমী কারণ ও বন্যার প্রভাবে ধীরগতি নথিভুক্ত করা হয়েছে।
উৎপাদন খাতে টানা ১১ মাস বৃদ্ধির অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে—যেখানে নতুন কার্যাদেশ, কারখানার উৎপাদন, উপকরণ ক্রয়, সমাপ্ত পণ্য, আমদানি এবং সরবরাহকারী সরবরাহের মতো গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলোতে বৃদ্ধি দেখা গেছে। তবে, কর্মসংস্থান এবং নতুন রপ্তানির সূচকগুলো সংকোচন দেখিয়েছে।
পরিষেবা খাতে, জুলাই মাসে টানা দশম মাসের মতো বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। যেখানে সমস্ত প্রধান সূচক—নতুন ব্যবসা, ব্যবসায়িক কার্যকলাপ, কর্মসংস্থান, উপকরণ খরচ এবং অর্ডার ব্যাকলগ—দ্রুত হারে প্রবৃদ্ধি নথিভুক্ত হয়েছে।
জুন মাসে প্রথমবারের মতো সংকোচনের পর নির্মাণ খাত জুলাই মাসে পুনরুদ্ধার করেছে। মাসটিতে নতুন ব্যবসা, নির্মাণ কার্যকলাপ, উপকরণ খরচ এবং অর্ডার ব্যাকলগের সম্প্রসারণ হয়েছে—যদিও কর্মসংস্থান হ্রাস অব্যাহত রয়েছে।
ইতোমধ্যে, কৃষিখাত তার দশম মাসের বৃদ্ধির অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, তবে তা ধীর গতিতে। নতুন ব্যবসা এবং উপকরণ খরচসহ বেশিরভাগ উপসূচক, ধীর প্রবৃদ্ধি নথিভুক্ত করেছে এবং কর্মসংস্থান আরও সংকুচিত হয়েছে।
ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি কৃষি, উৎপাদন ও পরিষেবাগুলোতে ধীর বৃদ্ধি হয়েছে। এতে নির্মাণ খাত আশাব্যঞ্জক উত্থান নথিভুক্ত করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সর্বশেষ পিএমআই সূচক ইঙ্গিত দেয় যে, জুলাই মাসে বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতি সম্প্রসারিত হয়েছে মূলত পরিষেবা ও উৎপাদন খাতের প্রবৃদ্ধির কারণে। এর ফলে রপ্তানি সর্বকালের সর্বোচ্চ ৪৭৭ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।’
তবে, কৃষি খাত জুলাই মাসে ধীরগতিতে সম্প্রসারিত হয়েছে, যা দুর্বল সময়কাল এবং বর্ষার ব্যাঘাতকে প্রতিফলিত করে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।