আপাতত কর্মসূচি নেই, সরকারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ

Bangla Post Desk
বাংলা পোস্ট প্রতিবেদক
প্রকাশিত:১২ মার্চ ২০২৫, ০৮:৩৯ পিএম
আপাতত কর্মসূচি নেই, সরকারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ

আপাতত আর নতুন করে কোনো আন্দোলন কর্মসূচি পালন করবে না ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ। তারা বগুড়ার শিশু ধর্ষণ মামলা অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ এবং ধর্ষণের বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনে সরকারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে।

বুধবার (১২ মার্চ) সচিবালয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে বৈঠকের পর ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের একজন নেত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তবে তিনি নাম প্রকাশ করেননি।

পাঁচ দফা দাবি নিয়ে আইন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিতে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের ২৮ জন নেতা বুধবার বিকেলে দিকে সচিবালয়ে প্রবেশ করেন। তাদের সঙ্গে এক ঘণ্টারও বেশি সময় বৈঠক করেন আসিফ নজরুল।

বৈঠক শেষে মঞ্চের ওই নেত্রী বলেন, ‘গত ৯ মার্চ রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি নারী হল থেকে শিক্ষার্থীরা নেমে এসেছিলেন সারাদেশে চলমান নারীর প্রতি ধর্ষণ ও সহিংসতার প্রতিবাদ জানাতে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের ঘোষণা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আমরা একটি মশাল মিছিল করি এবং রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে দাঁড়িয়ে ৫টি দাবি উত্থাপন করি। সেই পাঁচটি দাবি আজকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্মারকলিপি আকারে আইন উপদেষ্টার কাছে আমরা দিতে এসেছি।’

ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা বগুড়ার শিশু ধর্ষণ মামলার বিচারের কাজ এক মাসের মধ্যে শেষ করার দাবি জানিয়েছি। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে আশা করছি, এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা হবে। যাতে এটা সারা বাংলাদেশের সামনের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।’

‘ধর্ষণের মামলা বিচারের জন্য আমরা একটা বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের জন্য বলেছি। বিগত সময়ে ক্ষমতাসীন ব্যক্তিদের দিয়ে যে ধর্ষণগুলো সংঘটিত হয়েছে, তারা আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বের হয়ে গিয়েছে, সরকার তাদের বিচারের আওতায় আনেনি। আমরা চাই, এই বিশেষ আদালত একই সঙ্গে পুরনো মামলাগুলোর তদন্ত প্রক্রিয়া চালু করবে এবং বিচার করবে। আমরা বিশেষ করে সোহাগী জাহান তনু, মুনিয়ার মামলার কথা বলেছি। একই সঙ্গে র‌্যাব হেফাজতে রোজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণ করার যে ঘটনা ঘটেছে, এই ঘটনাটির কথাও আমরা উল্লেখ করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র, আইন এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টাকে চলমান ধর্ষণের জন্য দায় স্বীকার করতে হবে। সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে নারী ও শিশু নিপীড়নবিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে।’

ধর্ষণ সংশ্লিষ্ট আইনগুলোর বিভিন্ন ক্ষেত্রে অস্পষ্টতা রয়েছে জানিয়ে এই নেত্রী বলেন, ‘এগুলোকে ব্যবহার করে ধর্ষকরা ফাঁক-ফোকর দিয়ে বের হয়ে যায়। এই আইনগুলো সংস্কারের জন্য বলেছি আমরা। এক্ষেত্রে ধারা-উপধারাগুলোর অস্পষ্টতা দূর করার জন্য বলেছি।’

তিনজন উপদেষ্টার দায় স্বীকারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমরা দেখেছি দুজন উপদেষ্টা দায় স্বীকার করেছেন। বলেছেন, তারা নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, এজন্য তার আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

মিটিংয়ের পর আপনারা সন্তুষ্ট কিনা- এ বিষয়ে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের নেত্রী বলেন, আমরা আমাদের পক্ষ থেকে পাঁচটি সুস্পষ্ট দাবি উত্থাপন করেছি। পাঁচটা দাবি যদি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয়, বাংলাদেশের ধর্ষণের হার অনেক বেশি কমিয়ে আনা যাবে। যেভাবে স্যার আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তাতে আমরা আপাতত আশ্বস্ত হয়েছি।

আপনাদের এরপরের আন্দোলন কর্মসূচি কি হবে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আপাতত আমাদের আর কোন কর্মসূচি নেই। আমরা পর্যবেক্ষণ করবো আছিয়ার মামলার অগ্রগতি কিভাবে হচ্ছে। বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন নিয়ে তারা কিভাবে কাজ করছে।'